জবুর শরীফ 18 কিতাবুল মোকাদ্দস (BACIB)

জবুর

1. হে মাবুদ! তুমিই আমার শক্তি!আমি তোমাকেই মহব্বত করি।

2. মাবুদ আমার শৈল, আমার দুর্গ,ও আমার উদ্ধারকর্তা, আমার আল্লাহ্‌, আমার দৃঢ় শৈল,আমি তাঁর কাছে আশ্রয় নিয়েছি;আমার ঢাল, আমার নাজাতের শৃঙ্গ, আমার উচ্চদুর্গ।

3. আমি প্রশংসনীয় মাবুদকে ডাকব,এভাবে আমার দুশমনদের থেকে আমি নিস্তার পাব।

4. আমি মৃত্যুর দড়িতে বাঁধা পড়েছিলাম,ধ্বংসের খরস্রোতে আশঙ্কিত ছিলাম।

5. আমি পাতালের দড়িতে বাঁধা পড়েছিলাম,মৃত্যুর ফাঁদে জড়িত ছিলাম।

6. সঙ্কটে আমি মাবুদকে ডাকলাম,আমার আল্লাহ্‌র উদ্দেশে আর্তনাদ করলাম;তাঁর গৃহ থেকে তিনি আমার মিনতি শুনলেন,তাঁর সম্মুখে আমার আর্তনাদ তাঁর কর্ণে প্রবেশ করলো।

7. তখন দুনিয়া টলতে লাগল, কাঁপতে লাগল,পর্বতরাজির সমস্ত মূল বিচলিত হল ও টলতে লাগল,কারণ তিনি জ্বলে উঠলেন।

8. তাঁর নাসারন্ধ্র থেকে ধোঁয়া বের হল,তাঁর মুখনির্গত আগুন গ্রাস করলো;তাঁর কাছ থেকে বেরিয়ে আসল প্রজ্বলিত অঙ্গার।

9. তিনি আসমানকে নুইয়ে নামলেন,অন্ধকার তাঁর পদতলে ছিল।

10. তিনি কারুবী আরোহণে উড্ডীন হলেন,বায়ু-পক্ষভরে উড়ে আসলেন।

11. তিনি অন্ধকারকে তাঁর অন্তরাল,তাঁর চতুর্দিকস্থ তাঁবু করলেন;পানির ঘন অন্ধকার ও আসমানের ঘন মেঘমালাকে চন্দ্রাতপ করলেন।

12. তাঁর সম্মুখবর্তী তেজ থেকে মেঘমালা সরে গেল,দেখা গেল শিলাবৃষ্টি ও প্রজ্বলিত অঙ্গার।

13. আর মাবুদ আসমানে বজ্রনাদ করলেন,সর্বশক্তিমান তাঁর কণ্ঠস্বর শুনালেন;শিলাবৃষ্টি ও প্রজ্বলিত অঙ্গার দ্বারা।

14. তিনি তাঁর তীর মারলেন, তাদেরকে ছিন্নভিন্ন করলেন;অনেক বিদ্যুৎ চম্‌কিয়ে তাদেরকে বিশৃঙ্খল করলেন।

15. তখন জলরাশির সমস্ত প্রণালী প্রকাশ পেল,দুনিয়ার সমস্ত মূল অনাবৃত হল, তোমার তর্জনে,হে মাবুদ, তোমার নাসিকার প্রশ্বাসবায়ুতে।

16. তিনি উপর থেকে হাত বাড়িয়ে আমাকে ধরলেন,মহাজলরাশি থেকে আমাকে টেনে তুললেন;

17. তিনি আমাকে উদ্ধার করলেনআমার বলবান দুশমন থেকে, আমার বিদ্বেষীদের থেকে,কেননা তারা আমার চেয়ে শক্তিমান ছিল।

18. আমার বিপদের দিনে তারা আমার কাছে এল,কিন্তু মাবুদ আমার অবলম্বন হলেন।

19. তিনি আমাকে বাইরে প্রশস্ত স্থানে আনলেন,আমাকে উদ্ধার করলেন,কেননা তিনি আমাতে সন্তুষ্ট ছিলেন।

20. মাবুদ আমার ধার্মিকতানুযায়ী পুরস্কার দিলেন,আমার হাতের পবিত্রতা অনুযায়ী ফল দিলেন।

21. কেননা আমি মাবুদের পথে চলেছি,দুষ্টতাপূর্বক আমার আল্লাহ্‌কে ছেড়ে যাই নি।

22. কারণ তাঁর সমস্ত অনুশাসন আমার সম্মুখে ছিল,আমি তাঁর বিধি আমা থেকে দূর করি নি।

23. আর আমি তাঁর উদ্দেশে সিদ্ধ ছিলাম,আমার অপরাধ থেকে নিজেকে রক্ষা করতাম।

24. তাই মাবুদ আমার ধার্মিকতা অনুসারে ফল দিলেন,তাঁর সাক্ষাতে আমার হাতের পবিত্রতা অনুসারে দিলেন।

25. তুমি দয়াবানের সঙ্গে সদয় ব্যবহার করবে,সিদ্ধের সঙ্গে সিদ্ধ ব্যবহার করবে।

26. তুমি খাঁটিদের সঙ্গে খাঁটি ব্যবহার করবে,কুটিলের সঙ্গে চতুরতা ব্যবহার করবে।

27. কেননা তুমি দুঃখীদেরকে নিস্তার করবে,কিন্তু গর্বিত নয়ন অবনত করবে।

28. তুমিই আমার প্রদীপ উজ্জ্বল করে থাক;মাবুদ, আমার আল্লাহ্‌,তুমিই আমার অন্ধকার আলোকময় করে থাক।

29. কেননা তোমার দ্বারা আমি সৈন্যদলের বিরুদ্ধে দৌড়াই;আমার আল্লাহ্‌র দ্বারা প্রাচীর পার হই।

30. তিনিই আল্লাহ্‌, তাঁর পথ সিদ্ধ;মাবুদের কালাম পরীক্ষাসিদ্ধ;যারা তোমার মধ্যে আশ্রয় নেয় তুমি তাদের সকলের ঢাল।

31. কারণ মাবুদ ছাড়া আর আল্লাহ্‌ কে আছে?আমাদের আল্লাহ্‌ ছাড়া আর শৈল কে আছে?

32. আল্লাহ্‌ বল দিয়ে আমার কোমরবন্ধনী পরিয়েছেন।তিনি আমার পথ সিদ্ধ করেছেন।

33. তিনি আমার চরণ হরিণীর চরণের মত করেন,উচ্চস্থলীতে আমাকে সংস্থাপন করেন।

34. তিনি আমার হাতকে যুদ্ধ করতে শিক্ষা দেন,তাই আমার বাহু ব্রোঞ্জের ধনুকে চাড়া দেয়।

35. তুমি আমাকে নিজের উদ্ধার-ঢাল দিয়েছ;তোমার ডান হাত আমাকে ধারণ করেছে,তোমার কোমলতা আমাকে মহান করেছে।

36. তুমি আমার নিচে চলার পথ প্রশস্ত করেছ,আর আমার চরণ বিচলিত হয় নি।

37. আমি দুশমনদের পিছনে দৌড়াব, তাদেরকে ধরবো,সংহার না করে ফিরে আসব না।

38. আমি তাদেরকে চূর্ণ করবো,তারা আর উঠতে পারবে না,তারা আমার পদতলে পতিত হবে।

39. কারণ তুমি যুদ্ধার্থে বল দিয়ে আমার কোমর বেঁধেছ;যারা আমার বিরুদ্ধে উঠেছিল,তাদেরকে তুমি আমার অধীনে নত করেছ।

40. আমার দুশমনদেরকে আমা থেকে ফিরিয়ে দিয়েছ,আমি আমার বিদ্বেষীদেরকে সংহার করেছি।

41. তারা আর্তনাদ করলো, কিন্তু রক্ষাকর্তা কেউ নেই;মাবুদের কাছে কান্নাকাটি করলো, কিন্তু তিনি জবাব দিলেন না।

42. তখন আমি তাদেরকে বায়ুচালিত ধূলিকণার মত চূর্ণ করলাম;পথের কাদার মত ফেলে দিলাম;

43. তুমি আমাকে লোকদের বিদ্রোহ থেকে উদ্ধার করেছ,জাতিদের মস্তক হিসেবে নিযুক্ত করেছ;আমার অপরিচিত জাতি অমার গোলাম হবে।

44. শোনা মাত্র তারা আমার হুকুম মান্য করবে;বিজাতি-সন্তানেরা আমার কর্তৃত্ব স্বীকার করবে।

45. বিজাতি-সন্তানেরা ম্লান হবে,স্বকম্পে নিজ নিজ গুপ্ত স্থান থেকে বাইরে আসবে।

46. মাবুদ জীবন্ত, আমার শৈল ধন্য হোন,আমার উদ্ধারের আল্লাহ্‌ উন্নত হোন।

47. সেই আল্লাহ্‌ আমার পক্ষে প্রতিশোধ নেন,জাতিদেরকে, আমার অধীনে দমন করেন।

48. তিনি আমার দুশমনদের থেকে আমাকে উদ্ধার করেন;যারা আমার বিরুদ্ধে উঠে,তুমি তাদের উপরেও আমাকে উন্নত করছো,তুমি দুর্বৃত্ত লোক থেকে আমাকে উদ্ধার করছো।

49. এই কারণে, হে মাবুদ,আমি জাতিদের মধ্যে তোমার প্রশংসা করবো,তোমার নামের উদ্দেশে প্রশংসা-গজল করবো।

50. তিনি তাঁর বাদশাহ্‌কে মহাবিজয় দান করেন,তাঁর অভিষিক্ত ব্যক্তির প্রতি অটল মহব্বত প্রকাশ করেন,যুগে যুগে দাউদ ও তার বংশের প্রতি রহম করেন।