১ বাদশাহ্‌নামা 2:13-14-32 Kitabul Mukkadas (MBCL)

2. “দুনিয়ার সকলেই যে পথে যায় আমিও এখন সেই পথে যাচ্ছি। কাজেই তুমি শক্ত হও, নিজেকে উপযুক্ত পুরুষ হিসাবে দেখাও।

3. তোমার মাবুদ আল্লাহ্‌র ইচ্ছামত তুমি তাঁর পথে চলবে এবং মূসার শরীয়তে লেখা মাবুদের সব নিয়ম, হুকুম, নির্দেশ ও দাবি মেনে চলবে। এতে তুমি যা কিছু কর না কেন এবং যেখানেই যাও না কেন সফল হতে পারবে।

4. তাহলে মাবুদ যে ওয়াদা আমার কাছে করেছেন তা পূরণ করবেন। সেই ওয়াদা হল, ‘যদি তোমার বংশধরেরা সমস্ত মনপ্রাণ দিয়ে বিশ্বস্তভাবে আমার সামনে চলাফেরা করবার জন্য সাবধানে জীবন কাটায় তবে ইসরাইলের সিংহাসনে বসবার জন্য তোমার বংশে লোকের অভাব হবে না।’

5. “সরূয়ার ছেলে যোয়াব আমার প্রতি যা করেছে এবং ইসরাইলীয় সৈন্যদলের দুই সেনাপতির প্রতি, অর্থাৎ নেরের ছেলে অবনের ও যেথরের ছেলে অমাসার প্রতি যা করেছে তা তো তুমি জানই। সে তাদের খুন করেছে, শান্তির সময়েও যুদ্ধের সময়ের মত করে সে তাদের রক্তপাত করেছে আর সেই রক্ত তাঁর কোমর-বাঁধনিতে ও পায়ের জুতাতে লেগেছে।

6. তুমি তার সংগে বুদ্ধি করে চলবে, তবে বুড়ো বয়সে তুমি তাকে শান্তিতে কবরে যেতে দেবে না।

7. কিন্তু গিলিয়দের বর্সিল্লয়ের ছেলেদের প্রতি বিশ্বস্ত থেকো। তোমার টেবিলে যারা তোমার সংগে খাওয়া-দাওয়া করে তাদের মধ্যে তুমি তাদেরও স্থান দিয়ো। তোমার ভাই অবশালোমের কাছ থেকে পালিয়ে যাবার সময় তারা আমার পাশে এসে দাঁড়িয়েছিল।

8. মনে রেখো, বহুরীমের বিন্যামীন-গোষ্ঠীর গেরার ছেলে শিমিয়ি তোমার সংগে আছে। আমি যেদিন মহনয়িমে যাই সেই দিন সে আমাকে ভীষণ বদদোয়া দিয়েছিল। জর্ডানে সে আমার সংগে দেখা করতে আসলে পর আমি মাবুদের নামে তার কাছে কসম খেয়েছিলাম যে, আমি তাকে হত্যা করব না।

9. কিন্তু এখন তুমি তাকে নির্দোষ বলে মনে কোরো না। তুমি বুদ্ধিমান; তার প্রতি তুমি কি করবে তা তুমি নিজেই বুঝতে পারবে। তার বুড়ো বয়সে রক্তপাতের মধ্য দিয়েই তাকে কবরে পাঠিয়ে দেবে।”

13-14. পরে হগীতের ছেলে আদোনিয় সোলায়মানের মা বৎশেবার কাছে গেল। বৎশেবা তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমি কি ভাল মন নিয়ে এসেছ?”সে বলল, “জ্বী, ভাল মন নিয়েই এসেছি। আপনাকে আমার কিছু বলবার আছে।”বৎশেবা বললেন, “বল।”

15. তখন সে বলল, “আপনি তো জানেন রাজ্যটা আমারই ছিল। সমস্ত ইসরাইলীয়রা ভেবেছিল আমি বাদশাহ্‌ হব। কিন্তু অবস্থাটা বদলে গিয়ে রাজ্যটা আমার ভাইয়ের হাতে গেছে, কারণ এটা মাবুদের কাছ থেকেই সে পেয়েছে।

16. এখন আপনার কাছে আমার একটা অনুরোধ আছে। আপনি আমাকে ফিরিয়ে দেবেন না।”তিনি বললেন, “বল।”

17. সে তখন বলতে লাগল, “আপনি বাদশাহ্‌ সোলায়মানকে বলুন যেন তিনি শূনেমীয়া অবীশগকে আমার সংগে বিয়ে দেন। তিনি আপনার কথা ফেলবেন না।”

18. জবাবে বৎশেবা বললেন, “খুব ভাল, আমি তোমার কথা বাদশাহ্‌কে বলব।”

19. বৎশেবা যখন আদোনিয়ের কথা বলবার জন্য বাদশাহ্‌ সোলায়মানের কাছে গেলেন তখন বাদশাহ্‌ উঠে তাঁর সামনে উবুড় হয়ে সালাম জানালেন এবং তারপর তাঁর সিংহাসনে বসলেন। বাদশাহ্‌ তাঁর মায়ের জন্য একটা আসন আনিয়ে তাঁর ডান পাশে রাখলেন এবং তাঁর মা সেখানে বসলেন।

20. বৎশেবা বললেন, “আমি তোমাকে একটা ছোট্ট অনুরোধ করব; তুমি আমাকে ফিরিয়ে দিয়ো না।”জবাবে বাদশাহ্‌ বললেন, “বল মা, আমি তোমাকে ফিরিয়ে দেব না।”

21. বৎশেবা তখন বললেন, “তোমার ভাই আদোনিয়ের সংগে শূনেমীয়া অবীশগের বিয়ে দেওয়া হোক।”

22. জবাবে বাদশাহ্‌ সোলায়মান তাঁর মাকে বললেন, “আদোনিয়ের জন্য কেন তুমি শূনেমীয়া অবীশগকে চাইছ? তুমি তার জন্য রাজ্যটাও তো চাইতে পারতে, কারণ সে আমার বড় ভাই; জ্বী, তার জন্য, ইমাম অবিয়াথরের জন্য আর সরূয়ার ছেলে যোয়াবের জন্যও তা চাইতে পারতে।”

23. এর পর বাদশাহ্‌ সোলায়মান মাবুদের নামে কসম খেয়ে বললেন, “এই অনুরোধের জন্য যদি আদোনিয়ের প্রাণ নেওয়া না হয় তবে মাবুদ যেন আমাকে শাস্তি দেন, আর তা ভীষণভাবেই দেন।

24. যিনি আমার পিতা দাউদের সিংহাসনে আমাকে শক্তভাবে স্থাপিত করেছেন এবং তাঁর ওয়াদা অনুসারে আমার জন্য একটা রাজবংশের প্রতিষ্ঠা করেছেন সেই আল্লাহ্‌র কসম খেয়ে বলছি, আজই আদোনিয়কে হত্যা করা হবে।”

25. তারপর বাদশাহ্‌ সোলায়মান যিহোয়াদার ছেলে বনায়কে হুকুম দিলেন, আর বনায় আদোনিয়কে হত্যা করলেন।

26. পরে বাদশাহ্‌ ইমাম অবিয়াথরকে বললেন, “আপনি অনাথোতে নিজের জায়গায় ফিরে যান। আপনি মৃত্যুর যোগ্য, কিন্তু এখন আমি আপনাকে হত্যা করব না, কারণ আপনি আমার পিতা দাউদের সময়ে আল্লাহ্‌ মালিকের সিন্দুকটা বয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন এবং আমার বাবার সমস্ত দুঃখ-কষ্টের ভাগী হয়েছিলেন।”

27. এইভাবে সোলায়মান অবিয়াথরকে মাবুদের ইমাম পদ থেকে সরিয়ে দিলেন। মাবুদ শীলোতে আলীর বংশ সম্বন্ধে যা বলেছিলেন তাঁর সেই কথা এইভাবে পূর্ণ হল।

28. এই সব খবর যোয়াবের কানে গেল। তিনি অবশালোমের পক্ষে না গেলেও আদোনিয়ের পক্ষে গিয়েছিলেন, তাই তিনি পালিয়ে মাবুদের তাম্বুতে গিয়ে কোরবানগাহের শিং ধরে রইলেন।

29. বাদশাহ্‌ সোলায়মানকে বলা হল যে, যোয়াব পালিয়ে মাবুদের তাম্বুতে গেছেন এবং কোরবানগাহের কাছে আছেন। তখন সোলায়মান যিহোয়াদার ছেলে বনায়কে এই হুকুম দিলেন, “আপনি গিয়ে তাঁকে হত্যা করুন।”

30. কাজেই বনায় মাবুদের তাম্বুতে ঢুকে যোয়াবকে বললেন, “বাদশাহ্‌ আপনাকে বের হয়ে আসতে বলেছেন।”কিন্তু যোয়াব বললেন, “না, আমি এখানেই মরব।”বনায় বাদশাহ্‌কে সেই খবর জানিয়ে বললেন, “যোয়াব আমাকে এই জবাব দিয়েছেন।”

31. তখন বাদশাহ্‌ বনায়কে এই হুকুম দিলেন, “তিনি যা বলেছেন তা-ই করুন। তাঁকে হত্যা করে দাফন করে দিন। যোয়াব যে নির্দোষ লোকদের রক্তপাত করেছেন তার দোষ আপনি আমার ও আমার বাবার বংশ থেকে এইভাবে দূর করে দিন।

32. যে রক্তপাত তিনি করেছেন তার শোধ মাবুদ নেবেন, কারণ আমার পিতা দাউদের অজান্তে তিনি দু’জন লোককে হামলা করে হত্যা করেছিলেন। তাঁরা হলেন ইসরাইলের সৈন্যদলের সেনাপতি নেরের ছেলে অবনের আর এহুদার সৈন্যদলের সেনাপতি যেথরের ছেলে অমাসা। এই দু’জনই ছিলেন তাঁর চেয়ে আরও খাঁটি এবং আরও ভাল লোক।

১ বাদশাহ্‌নামা 2