3-4. তখন অয় শহর আক্রমণ করবার জন্য যিহোশূয় ত্রিশ হাজার বীর যোদ্ধা বেছে নিয়ে বেরিয়ে পড়লেন। তিনি রাতের বেলা তাদের এই আদেশ দিলেন, “তোমরা শোন, তোমাদের মধ্য থেকে কিছু সৈন্য তোমরা শহরের পিছন দিকে লুকিয়ে রাখবে। শহরের কাছ থেকে বেশী দূরে যাবে না। তোমরা সবাই প্রস্তুত থাকবে।
18. তখন সদাপ্রভু যিহোশূয়কে বললেন, “তোমার হাতের ঐ তলোয়ারখানা অয় শহরের দিকে বাড়িয়ে ধর, কারণ তোমার হাতেই আমি শহরটা তুলে দেব।” যিহোশূয় তখন তাঁর তলোয়ার অয় শহরের দিকে বাড়িয়ে ধরলেন;
19. সংগে সংগে লুকিয়ে থাকা সেই সৈন্যেরা তাদের জায়গা থেকে তাড়াতাড়ি উঠে শহরের দিকে দৌড়ে গেল। তারা সেখানে ঢুকে তা দখল করে নিল এবং অল্প সময়ের মধ্যেই শহরে আগুন ধরিয়ে দিল।
20. অয়ের লোকেরা পিছন ফিরে তাকিয়ে দেখল তাদের শহর থেকে ধূমা আকাশে উঠছে; কিন্তু তাদের আর কোন দিকে পালিয়ে যাওয়া সম্ভব হল না, কারণ যে ইস্রায়েলীয়েরা মরু-এলাকার দিকে পালিয়ে যাচ্ছিল তারা এর মধ্যে তাদের বিরুদ্ধে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল।
21. যিহোশূয় এবং সমস্ত ইস্রায়েলীয়েরা যখন দেখল যে, তাদের লুকিয়ে থাকা সৈন্যেরা শহরটা দখল করে নিয়েছে এবং শহর থেকে ধূমা উঠছে তখন তারা অয় শহরের লোকদের আক্রমণ করল।
22. লুকিয়ে থাকা সৈন্যেরাও অয়ের লোকদের আক্রমণ করবার জন্য শহর থেকে বের হয়ে আসল। তাতে অয়ের লোকেরা দু’টা ইস্রায়েলীয় দলের মাঝখানে আট্কা পড়ে গেল। ইস্রায়েলীয়েরা তাদের সবাইকে মেরে ফেলল, কাউকে বাঁচিয়ে রাখল না কিম্বা যেতেও দিল না।
23. তবে অয় শহরের রাজাকে তারা জীবন্ত অবস্থায় ধরে যিহোশূয়ের কাছে নিয়ে গেল।
24. যে মাঠে, অর্থাৎ যে মরু-এলাকায় অয় শহরের লোকেরা ইস্রায়েলীয়দের তাড়া করে নিয়ে গিয়েছিল সেখানে অয়ের লোকদের সবাইকে মেরে ফেলবার পর সমস্ত ইস্রায়েলীয় অয় শহরে ফিরে আসল এবং শহরের মধ্যে যারা ছিল তারা তাদেরও মেরে ফেলল।
25. সেই দিন অয় শহরের সমস্ত লোক, অর্থাৎ বারো হাজার স্ত্রী-পুরুষ মারা পড়ল।
26. অয় শহরে যারা ছিল তারা সবাই শেষ হয়ে না যাওয়া পর্যন্ত যিহোশূয় তলোয়ার সুদ্ধ হাতখানা বাড়িয়ে রাখলেন।
27. সদাপ্রভু যিহোশূয়কে যেমন নির্দেশ দিয়েছিলেন সেইমতই ইস্রায়েলীয়েরা সেই শহরের পশুপাল এবং লুট করা জিনিস নিজেদের জন্য নিয়ে নিল।
28. এইভাবে যিহোশূয় অয় শহরটা পুড়িয়ে দিয়ে সেটাকে চিরকালের জন্য একটা ধ্বংসের স্তূপ করে রাখলেন; আজও সেটা একটা পোড়ো জায়গা হয়ে আছে।
29. তিনি অয় শহরের রাজাকে মেরে ফেলে সন্ধ্যা পর্যন্ত গাছে টাংগিয়ে রাখলেন। সন্ধ্যাবেলা তিনি তাঁর দেহটা গাছ থেকে নামিয়ে শহরের ফটকে ঢুকবার পথে ছুঁড়ে ফেলবার আদেশ দিলেন। লোকেরা তাঁর উপর পাথর দিয়ে একটা বড় স্তূপ করে রাখল। সেটা আজও রয়েছে।
30-31. এর পর ইস্রায়েলীয়দের কাছে দেওয়া সদাপ্রভুর দাস মোশির আদেশ অনুসারে যিহোশূয় এবল পাহাড়ের উপরে ইস্রায়েলীয়দের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশে একটা বেদী তৈরী করলেন। মোশির আইন-কানুনের বইয়ে যেমন লেখা আছে সেই অনুসারেই তিনি তা তৈরী করলেন। বেদীটি তৈরী করতে কোন পাথর কেটে নেওয়া হয় নি এবং তার উপর কোন লোহার যন্ত্রপাতিও ব্যবহার করা হয় নি। সেই বেদীর উপর ইস্রায়েলীয়েরা সদাপ্রভুর উদ্দেশে পোড়ানো এবং যোগাযোগ-উৎসর্গের অনুষ্ঠান করল।
32. এবল পাহাড়ের উপরে ইস্রায়েলীয়দের সামনে যিহোশূয় পাথরের উপরে মোশির লেখা আইন-কানুন নকল করলেন।
33. ইস্রায়েলীয়েরা এবং তাদের মধ্যে বাসকারী অন্য জাতির লোকেরা, তাদের বৃদ্ধ নেতারা, কর্মচারীরা এবং বিচারকর্তারা, অর্থাৎ ইস্রায়েলীয় সমাজের সমস্ত লোক সদাপ্রভুর সাক্ষ্য-সিন্দুকের দুই পাশে দাঁড়িয়ে ছিল; তারা সিন্দুক বহনকারী লেবীয় পুরোহিতদের সামনে ছিল। তাদের অর্ধেক লোক দাঁড়াল গরিষীম পাহাড়ের সামনে আর অর্ধেক লোক দাঁড়াল এবল পাহাড়ের সামনে। সদাপ্রভুর দাস মোশি এই কথা আগেই বলেছিলেন যখন তিনি ইস্রায়েলীয়দের উপর আশীর্বাদ করবার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
34. তারপর যিহোশূয় আইন-কানুনের বইয়ে যে সমস্ত আশীর্বাদ এবং অভিশাপের কথা লেখা ছিল তা হুবহু পড়ে শোনালেন।
35. মোশি এই ব্যাপারে যে সব আদেশ দিয়েছিলেন তার একটি শব্দও বাদ না দিয়ে যিহোশূয় গোটা ইস্রায়েল সমাজকে তা পড়ে শোনালেন। এই সমাজের মধ্যে স্ত্রীলোক, ছেলেমেয়ে এবং তাদের মধ্যে বাস করা অন্য জাতির লোকেরাও ছিল।