3. কিন্তু যখন তাকে আর লুকিয়ে রাখা সম্ভব হল না তখন তিনি নল দিয়ে বোনা একটা টুকরি নিয়ে তাতে মেটে তেল ও আলকাতরা লেপে দিলেন আর ছেলেটিকে তার মধ্যে শুইয়ে সেটা নীল নদীর পারে জলের মধ্যে একটা নলবনে রেখে আসলেন।
4. ছেলেটির দশা কি হয় তা দেখবার জন্য তার বোন সেখান থেকে কিছু দূরে দাঁড়িয়ে রইল।
5. কিছুক্ষণ পরে ফরৌণের মেয়ে নদীতে স্নান করতে আসলেন। তাঁর দাসীরা তখন নদীর পারে ঘোরাফেরা করছিল। এমন সময় তিনি নলবনের মধ্যে সেই টুকরিটা দেখতে পেয়ে সেটা তাঁর কাছে নিয়ে আসবার জন্য একজন দাসীকে পাঠিয়ে দিলেন।
6. সেটা খুলে তিনি আশ্চর্য হয়ে দেখলেন একটা ছেলে তার মধ্যে কাঁদছে। ছেলেটির উপর রাজকন্যার খুব মায়া হল। তিনি বললেন, “এটি ইব্রীয়দের কোন ছেলে।”
7. তখন ছেলেটির বোন এসে ফরৌণের মেয়েকে বলল, “আমি কি আপনার জন্য একজন ইব্রীয় স্ত্রীলোক ডেকে আনব, যে একে বুকের দুধ খাওয়াতে পারবে? ”
8. তিনি বললেন, “হ্যাঁ, যাও।” তখন মেয়েটি গিয়ে ছেলেটির মাকেই ডেকে আনল।
9. ফরৌণের মেয়ে তাঁকে বললেন, “এই ছেলেটিকে নিয়ে গিয়ে আমার হয়ে তোমার বুকের দুধ খাইয়ে লালন-পালন কর। এর জন্য আমি তোমাকে বেতন দেব।” তখন সেই স্ত্রীলোকটি ছেলেটিকে নিয়ে গিয়ে দুধ খাইয়ে তাকে লালন-পালন করতে লাগলেন।
10. ছেলেটি একটু বড় হলে পর স্ত্রীলোকটি তাকে ফরৌণের মেয়ের কাছে নিয়ে গেলেন, আর তিনি তাকে নিজের ছেলে হিসাবে গ্রহণ করলেন। তিনি বললেন, “ওকে আমি জল থেকে তুলে এনেছি।” সেইজন্য তিনি তার নাম দিলেন মোশি।
11. পরে বড় হয়ে মোশি একদিন তাঁর নিজের জাতির লোকদের সংগে দেখা করতে গিয়ে দেখলেন, কি ভীষণ পরিশ্রম তাদের করতে হচ্ছে। তাঁর চোখে পড়ল যে, তাঁর নিজের ইব্রীয় জাতির একজন লোককে একজন মিসরীয় মারধর করছে।
12. তিনি এদিক ওদিক তাকিয়ে আশেপাশে কাউকে দেখতে পেলেন না। তখন তিনি সেই মিসরীয়কে মেরে ফেলে বালি চাপা দিয়ে রাখলেন।
13. পরদিন তিনি আবার বাইরে গিয়ে দু’জন ইব্রীয়কে মারামারি করতে দেখলেন। যে দোষী তাকে তিনি বললেন, “কেন তুমি তোমার ভাইকে মারছ? ”
14. লোকটি বলল, “কে তোমাকে আমাদের নেতা ও শাসনকর্তা করেছে? সেই মিসরীয়ের মত আমাকেও মেরে ফেলতে চাও নাকি? ” এই কথা শুনে মোশি ভয় পেলেন। তিনি ভাবলেন, নিশ্চয়ই ব্যাপারটা জানাজানি হয়ে গেছে।
15. ফরৌণ এই ঘটনা জানতে পেরে মোশিকে মেরে ফেলবার চেষ্টা করতে লাগলেন। কিন্তু মোশি ফরৌণের কাছ থেকে পালিয়ে মিদিয়ন দেশে বাস করবার জন্য চলে গেলেন। সেখানে গিয়ে তিনি একটা কূয়ার ধারে বসে রইলেন।
16. সেখানকার মিদিয়নীয় পুরোহিতের সাতটি মেয়ে ছিল। তারা তাদের বাবার ভেড়াগুলোকে জল খাওয়াবার জন্য জল তুলে গামলা ভরতে সেই জায়গায় গেল।