1-2. এর পর সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “তুমি ফরৌণের কাছে যাও। আমি ফরৌণ ও তার কর্মচারীদের মন শক্ত করেছি যাতে তারা আমার এই সব ক্ষমতার চিহ্ন দেখতে পায় আর যাতে পরে তুমি তোমার ছেলেদের ও নাতিদের কাছে বলতে পার মিসরীয়দের আমি কিভাবে বোকা বানিয়েছি এবং আমার ক্ষমতার চিহ্ন দেখিয়েছি। এতে তোমরা বুঝতে পারবে যে, আমিই সদাপ্রভু।”
3. মোশি ও হারোণ তখন ফরৌণের কাছে গিয়ে বললেন, “ইব্রীয়দের ঈশ্বর সদাপ্রভু বলছেন, ‘আর কতদিন তুমি আমার সামনে মাথা নোয়াতে অস্বীকার করবে? আমার উপাসনা করবার জন্য আমার লোকদের যেতে দাও।
4. যদি তুমি আমার লোকদের যেতে দিতে রাজী না হও তবে কালকেই আমি তোমার দেশের মধ্যে পংগপাল নিয়ে আসব।
5. সেগুলো এসে দেশটা এমনভাবে ঢেকে ফেলবে যে, মাটি পর্যন্ত দেখা যাবে না। শিলাবৃষ্টির হাত থেকে যা রেহাই পেয়েছে সেগুলো সব এই পংগপাল খেয়ে ফেলবে। মাঠে যে সব গাছপালা গজাচ্ছে সেগুলোও তারা খেয়ে ফেলবে।
6. তারপর তোমার ও তোমার সব কর্মচারীদের এবং অন্যান্য সমস্ত মিসরীয়দের বাড়ী-ঘর এই সব পংগপালে ভরে যাবে। এই দেশে আসবার পর থেকে আজ পর্যন্ত তোমার বাপ-দাদারা এবং তাদের বাপ-দাদারাও কখনও এমন হতে দেখে নি।’ ” এই কথা বলবার পর মোশি পিছন ফিরে ফরৌণের কাছ থেকে চলে গেলেন।
7. তখন ফরৌণের কর্মচারীরা তাঁকে বলল, “এই লোকটা আর কতদিন আমাদের ফাঁদ হয়ে থাকবে? ঐ লোকগুলো যেন তাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উপাসনা করতে পারে সেইজন্য তাদের যেতে দিন। আপনি কি বুঝতে পারছেন না যে, মিসর দেশটা একেবারে ধ্বংস হয়ে গেল? ”
8. কাজেই মোশি ও হারোণকে আবার ফরৌণের কাছে নিয়ে আসা হল। ফরৌণ তাঁদের বললেন, “যাও, তোমরা গিয়ে তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উপাসনা কর। কিন্তু তোমাদের সংগে আর কারা যাবে? ”
9. উত্তরে মোশি বললেন, “আমাদের শিশু ও বৃদ্ধ, আমাদের ছেলেমেয়ে এবং আমাদের গরু-ভেড়া সবই আমাদের সংগে যাবে, কারণ সদাপ্রভুর উদ্দেশে আমাদের একটা উৎসব পালন করতে হবে।”
10. তখন ফরৌণ তাঁদের বললেন, “যদি কখনও আমি ছেলেমেয়েদের নিয়ে তোমাদের যেতে দিই তবে তোমাদের ঐ সদাপ্রভুটাও যেন তোমাদের সংগে থাকে। সাবধান! তোমাদের উদ্দেশ্য ভাল নয়।
11. না, তা হবে না। তোমরা তো সদাপ্রভুর উপাসনা করতে যেতে চাইছ, তবে কেবল পুরুষেরাই যাক।” এর পর ফরৌণের সামনে থেকে মোশি এবং হারোণকে তাড়িয়ে দেওয়া হল।
12. পরে সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “মিসর দেশের উপর তোমার হাত বাড়িয়ে দাও। তাতে মাঠের সবুজ সব কিছু, অর্থাৎ শিলাবৃষ্টি থেকে রেহাই পাওয়া সব কিছু পংগপাল এসে খেয়ে ফেলবে।”
13. তখন মোশি মিসর দেশের উপরে তাঁর লাঠিটা বাড়িয়ে ধরলেন; আর সদাপ্রভু এমন করলেন যার দরুন সেই দেশের উপর সারা দিন ও সারা রাত ধরে পূবের বাতাস বইল। সকালবেলা সেই পূবের বাতাস ঝাঁকে ঝাঁকে পংগপাল নিয়ে আসল।
14. এতে সারা মিসর দেশের উপর অসংখ্য পংগপাল এসে সব জায়গায় বসল। এত বেশী পংগপাল আগে আর কখনও দেখা যায় নি, কখনও দেখা যাবেও না।
15. সেই সব পংগপাল সারা দেশটা এমনভাবে ঢেকে ফেলল যে, মাটির উপরটা কালো দেখাতে লাগল। মাঠে সবুজ সব কিছু আর গাছে যে সব ফল শিলাবৃষ্টি থেকে রক্ষা পেয়েছিল সেগুলো সব তারা খেয়ে ফেলল। সারা মিসর দেশের গাছপালাতে সবুজ বলতে কিছুই রইল না।
16. তখন ফরৌণ তাড়াতাড়ি মোশি ও হারোণকে ডাকিয়ে এনে বললেন, “তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু ও তোমাদের বিরুদ্ধে আমি পাপ করেছি।
17. তাই দয়া করে তোমরা কেবল এবারের মত আমার পাপ ক্ষমা কর। তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর কাছে মিনতি কর যেন তিনি আমার উপর থেকে এই মৃত্যুর ছায়া সরিয়ে নেন।”
18. তখন মোশি ফরৌণের কাছ থেকে গিয়ে সদাপ্রভুর কাছে মিনতি করলেন।
19. তাতে সদাপ্রভু বাতাসের মোড় ঘুরিয়ে দিলেন আর পশ্চিম দিক থেকে একটা জোর বাতাস এসে পংগপালগুলো উড়িয়ে নিয়ে লোহিত সাগরে ফেলল। সারা মিসর দেশে আর একটাও পংগপাল রইল না।
20. কিন্তু সদাপ্রভু ফরৌণের মন কঠিন করলেন; তিনি ইস্রায়েলীয়দের যেতে দিলেন না।
21. পরে সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “আকাশের দিকে তোমার হাত বাড়িয়ে দাও। তাতে হাত দিয়ে ছোঁয়ার মত অন্ধকারে দেশটা ডুবে যাবে।”