20. তিনি বললেন,“ঈশ্বর চিরকাল ধন্য হোন;জ্ঞান ও শক্তি তাঁরই।
21. তিনিই সময় ও ঋতু তাঁর অধীনে রাখেন;তিনি রাজাদের সিংহাসনে বসান ও নামিয়ে দেন।তিনি জ্ঞানীদের জ্ঞান দান করেনআর বুদ্ধিমানদের বুদ্ধি দান করেন।
22. তিনি গভীর ও লুকানো বিষয় প্রকাশ করেন;তিনি জানেন অন্ধকারের মধ্যে কি আছে;তাঁর সংগে আলো বাস করে।
23. হে আমার পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর,আমি তোমাকে ধন্যবাদ দিই, তোমার প্রশংসা করি,কারণ তুমি আমাকে জ্ঞান ও ক্ষমতা দিয়েছ;আমরা তোমার কাছে যা জানতে চেয়েছিলামতা তুমি আমাকে জানিয়েছ;রাজার স্বপ্নের বিষয় তুমি আমাদের জানিয়েছ।”
24. পরে দানিয়েল অরিয়োকের কাছে গেলেন। রাজা অরিয়োককেই তাঁর পরামর্শদাতাদের মেরে ফেলবার জন্য নিযুক্ত করেছিলেন। দানিয়েল অরিয়োককে বললেন, “রাজার পরামর্শদাতাদের মেরে ফেলবেন না। আমাকে রাজার কাছে নিয়ে চলুন; আমি রাজার স্বপ্নের অর্থ বলব।”
25. অরিয়োক তখনই দানিয়েলকে রাজার কাছে নিয়ে গিয়ে বললেন, “যিহূদার বন্দীদের মধ্যে আমি এমন একজন লোককে পেয়েছি যে মহারাজের স্বপ্নের অর্থ বলে দিতে পারবে।”
26. দানিয়েল, যাঁকে বেল্টশৎসর নামে ডাকা হত তাঁকে রাজা জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমি কি আমার স্বপ্ন ও তার অর্থ আমাকে বলতে পারবে?”
27. উত্তরে দানিয়েল বললেন, “মহারাজ যে অজানা বিষয়ের কথা জিজ্ঞাসা করেছেন তা কোন গুণিন, ভূতের ওঝা, যাদুকর কিম্বা গণক বলতে পারবেন না;
28. কিন্তু স্বর্গে একজন ঈশ্বর আছেন যিনি গুপ্ত বিষয় প্রকাশ করেন। ভবিষ্যতে যা ঘটবে তা তিনি রাজা নবূখদ্নিৎসরকে জানিয়েছেন। আপনার স্বপ্ন, অর্থাৎ বিছানায় শুয়ে যে দর্শন আপনি দেখেছেন তা আমি এখন বলব।
29. “হে মহারাজ, আপনি যখন বিছানায় শুয়ে ছিলেন তখন ভবিষ্যতে কি হবে সেই কথা চিন্তা করছিলেন। যিনি গুপ্ত বিষয় প্রকাশ করেন তিনি আপনাকে দেখিয়ে দিয়েছেন কি ঘটবে।
30. অন্যান্য লোকদের চেয়ে আমার বেশী জ্ঞান আছে বলে যে আমার কাছে এই অজানা বিষয় প্রকাশিত হয়েছে তা নয়, কিন্তু হে মহারাজ, আমাকে এটা বলা হয়েছে যাতে আপনি এর অর্থ জানতে পারেন এবং আপনার মনের চিন্তা বুঝতে পারেন।
31. “হে মহারাজ, আপনি তাকিয়ে ছিলেন, আর আপনার সামনে একটা বিরাট মূর্তি দাঁড়িয়ে ছিল; মূর্তিটা বিরাট, খুব উজ্জ্বল এবং তার চেহারাটা ভয়ংকর।
32. সেই মূর্তির মাথাটা খাঁটি সোনার, বুক ও হাত রূপার এবং পেট ও ঊরু ব্রোঞ্জের তৈরী;
33. তার পা লোহার এবং পায়ের পাতা কিছুটা লোহা ও কিছুটা মাটি দিয়ে তৈরী ছিল।
34. আপনি যখন তাকিয়ে দেখছিলেন তখন একটা পাথর কেটে নেওয়া হল, কিন্তু সেটা মানুষের হাতে কাটা হয় নি। সেই পাথরটা লোহা ও মাটি মেশানো পায়ে আঘাত করে তা চুরমার করে ফেলল।
35. তখন লোহা, মাটি, ব্রোঞ্জ, রূপা ও সোনা টুকরা টুকরা হয়ে ভেংগে পড়ল এবং গরমকালে খামারের মেঝেতে পড়ে থাকা তূষের মত হয়ে গেল। বাতাস তা এমন করে উড়িয়ে নিয়ে গেল যে, তার আর কোন চিহ্নই রইল না। কিন্তু যে পাথরটা মূর্তিটাকে আঘাত করেছিল সেটা একটা বিরাট পাহাড় হয়ে গিয়ে সমস্ত পৃথিবী দখল করে ফেলল।
36. “এটাই ছিল সেই স্বপ্ন। এখন আমরা তার অর্থ মহারাজের কাছে বলব।
37. হে মহারাজ, আপনি রাজাদের রাজা। স্বর্গের ঈশ্বর আপনাকে রাজ্য, ক্ষমতা, শক্তি ও সম্মান দান করেছেন।
38. আপনার হাতে তিনি মানুষ, পশু আর পাখীদের দিয়েছেন। তারা যেখানেই বাস করুক না কেন তিনি তাদের সকলকে আপনার অধীন করেছেন। আপনিই সেই সোনার মাথা।
39. “আপনার রাজ্যের পরে যে রাজ্য উঠবে সেটা আপনার রাজ্যের মত মহান হবে না। তার পরে তৃতীয় আর একটা রাজ্য উঠবে, সেটা সেই ব্রোঞ্জের পেট ও ঊরু; আর গোটা পৃথিবী সেই রাজ্যের অধীন হবে।
40. শেষে লোহার মত শক্ত চতুর্থ একটা রাজ্য উঠবে। লোহা যেমন সব কিছু ভেংগে চুরমার করে তেমনি সেই রাজ্য অন্য সব রাজ্যকে ভেংগে চুরমার করবে।