আদিপুস্তক 24:16-17-31 পবিত্র বাইবেল (SBCL)

2. বাড়ীর সবচেয়ে পুরানো যে দাসের উপর তাঁর সব কিছুর ভার ছিল তাকে তিনি একদিন বললেন, “তোমার হাতখানা আমার ঊরুর নীচে রাখ।

3. যিনি স্বর্গ ও পৃথিবীর ঈশ্বর সেই সদাপ্রভুর সামনে আমি তোমাকে এই দিব্য করাচ্ছি: আমি যে কনানীয়দের মধ্যে বাস করছি তাদের মধ্য থেকে কোন মেয়েকে আমার ছেলের স্ত্রী হিসাবে তুমি বেছে নেবে না।

4. তার বদলে তুমি আমার দেশে গিয়ে আমার বংশের লোকদের মধ্য থেকে একটি মেয়েকে আমার ছেলে ইস্‌হাকের জন্য বেছে নেবে।”

5. এই কথা শুনে সেই দাস অব্রাহামকে বলল, “যদি সেই মেয়ে আমার সংগে এই দেশে আসতে রাজী না হয়, তাহলে যে দেশ ছেড়ে আপনি এসেছেন সেই দেশেই কি আবার আপনার ছেলেকে আমি নিয়ে যাব?”

6. অব্রাহাম বললেন, “সাবধান, আমার ছেলেকে তুমি কখনও সেখানে নিয়ে যাবে না।

7. স্বর্গের ঈশ্বর সদাপ্রভু আমাকে আমার বাবার বাড়ী-ঘর ও আমার জন্মস্থান থেকে বের করে এনেছেন। তিনি আমার সংগে কথা বলেছিলেন এবং শপথ করে বলেছিলেন যে, এই দেশ তিনি আমার বংশকে দেবেন। তিনি তোমার আগেই তাঁর দূতকে সেখানে পাঠিয়ে দেবেন যাতে আমার ছেলের স্ত্রী হওয়ার জন্য তুমি সেখান থেকে একটি মেয়ে নিয়ে আসতে পার।

8. কিন্তু সেই মেয়ে যদি তোমার সংগে আসতে রাজী না হয়, তবে আমার এই দিব্য থেকে তুমি মুক্ত। কিন্তু আমার ছেলেকে তুমি কখনও সেখানে নিয়ে যাবে না।”

9. তখন সেই দাস তার মনিব অব্রাহামের ঊরুর নীচে হাত রেখে এই ব্যাপারে তাঁর কাছে শপথ করল।

16-17. রিবিকা ছিলেন খুব সুন্দরী, অবিবাহিতা আর কুমারী। তিনি কূয়া থেকে কলসী ভরে যখন উঠে আসছিলেন তখন অব্রাহামের দাস দৌড়ে তাঁর কাছে গিয়ে বলল, “দয়া করে আপনার কলসী থেকে আমাকে একটু জল খেতে দিন।”

18. রিবিকা বললেন, “এই নিন, জল খান।” এই কথা বলেই তিনি তাড়াতাড়ি করে কলসীটা কাঁধ থেকে হাতে নিয়ে তাকে জল খেতে দিলেন।

19. জল খাওয়াবার পর রিবিকা তাকে বললেন, “আমি আপনার উটগুলোর জন্যও জল তুলে দেব যতক্ষণ না ওদের জল খাওয়া শেষ হয়।”

20. এই বলে তিনি তাড়াতাড়ি করে পশুদের জল খাওয়াবার গামলাটায় তাঁর কলসীর জল ঢেলে দিয়ে আবার দৌড়ে কূয়ার কাছে গেলেন। এইভাবে তিনি সব উটগুলোর জন্য জল তুলে দিলেন।

21. সদাপ্রভু তার এই যাত্রা সফল করেছেন কি না তা জানবার জন্য সেই দাস চুপ করে রিবিকাকে লক্ষ্য করতে লাগল।

22. উটগুলোর জল খাওয়া শেষ হলে পর সে প্রায় ছয় গ্রাম ওজনের একটা সোনার নথ আর দুই হাতের জন্য একশো বিশ গ্রাম ওজনের দু’টি সোনার বালা বের করে রিবিকাকে দিয়ে বলল,

23. “আপনি কার মেয়ে? আপনি কি বলতে পারেন আপনার বাবার বাড়ীতে আমাদের থাকবার জায়গা হবে কি না?”

24. রিবিকা বললেন, “আমার বাবার নাম বথূয়েল। তিনি মিল্‌কা ও নাহোরের ছেলে।”

25. তিনি আরও বললেন, “আমাদের বাড়ীতে যথেষ্ট খড় ও ভূষি আছে এবং থাকবার জায়গাও রয়েছে।”

26. তখন সেই দাস মাটিতে মাথা ঠেকিয়ে সদাপ্রভুকে তার অন্তরের ভক্তি জানিয়ে বলল,

27. “ধন্য সদাপ্রভু, যিনি আমার মনিব অব্রাহামের ঈশ্বর! তিনি আমার মনিবকে তাঁর দেওয়া কথা রাখতে ও বিশ্বস্ততা দেখাতে ভুলে যান নি। আমাকেও তিনি পথ দেখিয়ে আমার মনিবের ভাইয়ের বাড়ীতে নিয়ে এসেছেন।”

28. রিবিকা কিন্তু দৌড়ে গিয়ে বাড়ীর সবাইকে আর বাড়ীর প্রধান তাঁর মাকে এই কথা জানালেন।

29-30. রিবিকার ভাইয়ের নাম ছিল লাবন। বোনের হাতে বালা ও নাকে নথ দেখে এবং লোকটি যা বলেছিল তা বোনের মুখে শুনে তিনি শহরের বাইরে কূয়ার পাশে সেই লোকটির কাছে ছুটে চললেন। সেখানে গিয়ে তিনি দেখলেন, লোকটি কূয়ার কাছে উটগুলোর পাশে দাঁড়িয়ে আছে।

31. লাবন তাকে বললেন, “হে সদাপ্রভুর আশীর্বাদের পাত্র, আসুন। কেন বাইরে দাঁড়িয়ে আছেন? আমি আপনাদের জন্য ঘর এবং উটগুলোর জন্য জায়গা ঠিক করে রেখে এসেছি।”

আদিপুস্তক 24