13. তখন আমি দেখলাম, যেমন অন্ধকারের চেয়ে আলো উত্তম, তেমনি অজ্ঞানতার চেয়ে প্রজ্ঞা উত্তম।
14. জ্ঞানবানের মস্তকেই চোখ থাকে, কিন্তু হীনবুদ্ধি অন্ধকারে ভ্রমণ করে; তবুও আমি জানলাম যে, সকলেরই এক দশা ঘটে।
15. তখন আমি মনে মনে বললাম, হীনবুদ্ধির প্রতি যা ঘটে, তা-ই তো আমার প্রতি ঘটে, তবে আমি কি জন্য বেশি জ্ঞানবান হলাম? পরে আমি মনে মনে বললাম, এও অসার।
16. কেননা হীনবুদ্ধির মত জ্ঞানবানের বিষয়ও লোকে চিরকাল মনে রাখবে না, ভবিষ্যৎকালে কিছুই স্মরণে থাকবে না; আহা! হীনবুদ্ধি যেমন মরে, তেমনি জ্ঞানবানও মরে।
17. সুতরাং আমি জীবনে বিরক্ত হলাম; কেননা সূর্যের নিচে যে কাজ করা হয় তা আমার কষ্টদায়ক মনে হল; কারণ সকলই অসার ও বায়ুর পিছনে দৌড়ানো ছাড়া আর কিছু নয়।
18. সূর্যের নিচে আমি যে পরিশ্রমে পরিশ্রান্ত হতাম, আমার সেসব পরিশ্রমে বিরক্ত হলাম; কেননা আমার পরবর্তী ব্যক্তির জন্য তা রেখে যেতে হবে।
19. আর সে জ্ঞানবান হবে, কি হীনবুদ্ধি হবে, তা কে জানে? কিন্তু আমি সূর্যের নিচে যে পরিশ্রম করে প্রজ্ঞা দেখাতাম, সেসব পরিশ্রমের ফলাধিকারী সে হবে; এও অসার।
20. অতএব সূর্যের নিচে আমি যে পরিশ্রমে পরিশ্রান্ত হতাম, পুনরায় আমার সেসব পরিশ্রমের বিষয়ে নিজের হৃদয়কে নিরাশ করলাম।
21. কেননা এক ব্যক্তির পরিশ্রম প্রজ্ঞা, বিদ্যা ও কৌশল সহযুক্ত হতে পারে; তবুও যে ব্যক্তি সে বিষয়ে পরিশ্রম করে নি, তাকে তার অধিকার বলে তা দিয়ে যেতে হয়।
22. এও অসার ও বড় মন্দ। তবে সূর্যের নিচে মানুষ যেসব পরিশ্রম ও হৃদয়ের উদ্বেগে পরিশ্রান্ত হয়, তাতে তার কি ফল লাভ হয়?
23. কেননা তার সমস্ত দিন ব্যথাযুক্ত এবং তার কষ্ট মনস্তাপজনক, রাত্রেও তার দিল বিশ্রাম পায় না। এও অসার।
24. ভোজন পান করা এবং নিজের পরিশ্রমের মধ্যে প্রাণকে সুখভোগ করানো ছাড়া আর মঙ্গল মানুষের হয় না; এও আমি দেখলাম যে, তা আল্লাহ্ থেকে হয়।
25. আর আমা থেকে কে বেশি ভোজন করতে কিংবা বেশি সুখভোগ করতে পারে?
26. বস্তুত যে ব্যক্তি আল্লাহ্র প্রীতিজনক, তাকে তিনি প্রজ্ঞা, বিদ্যা ও আনন্দ দেন; কিন্তু গুনাহ্গারকে কষ্ট দেন, যেন সে আল্লাহ্র প্রীতিজনক ব্যক্তিকে দেবার জন্য ধন সংগ্রহ ও সঞ্চয় করে। এও অসার ও বায়ুর পিছনে দৌড়ানো ছাড়া আর কিছু নয়।