16. বহুরীম গ্রামের বিন্যামীন-গোষ্ঠীর গেরার ছেলে শিমিয়ি দেরি না করে এহুদার লোকদের সাথে বাদশাহ্ দাউদের সংগে দেখা করতে আসল।
17. তার সংগে ছিল বিন্যামীন-গোষ্ঠীর এক হাজার লোক এবং তালুতের পরিবারের চাকর সীবঃ ও তার পনেরজন ছেলে আর বিশজন চাকর। বাদশাহ্ জর্ডান নদী পার হওয়ার আগেই তারা তাড়াতাড়ি করে জর্ডান নদীর কাছে গিয়ে উপস্থিত হল।
18. বাদশাহ্র পরিবারের সবাইকে নিয়ে আসবার জন্য এবং বাদশাহ্র ইচ্ছামত কাজ করবার জন্য তারা হেঁটে পার হওয়ার জায়গা দিয়ে নদী পার হল।বাদশাহ্ যখন জর্ডান নদী পার হবেন ঠিক সেই সময় গেরার ছেলে শিমিয়ি এসে বাদশাহ্র সামনে উবুড় হয়ে পড়ে বলল,
19. “হুজুর যেন আমার দোষ না ধরেন। আমার প্রভু মহারাজ যেদিন জেরুজালেম ছেড়ে যান সেই দিন আপনার গোলাম আমি যে অন্যায় করেছিলাম তা যেন আপনি মনে না রাখেন। মহারাজ যেন তাঁর মন থেকে তা দূর করে দেন।
20. আমি জানি যে, আমি গুনাহ্ করেছি। সেইজন্য আজ ইউসুফের বংশের মধ্যে আমিই সকলের আগে আমার প্রভু মহারাজের সংগে দেখা করবার জন্য এখানে এসেছি।”
21. তখন সরূয়ার ছেলে অবীশয় বললেন, “মাবুদের অভিষেক-করা বান্দাকে শিমিয়ি বদদোয়া দিয়েছিল বলে কি তাকে হত্যা করা উচিত নয়?”
22. জবাবে দাউদ বললেন, “হে সরূয়ার ছেলেরা, এই বিষয়ে তোমাদের সংগে আমার সম্বন্ধ কি? আজ কেন তোমরা আমার বিরুদ্ধে যাচ্ছ? আজ কি ইসরাইল দেশে কাউকে হত্যা করা উচিত? আমি কি এই কথা জানি না যে, আজও আমি বনি-ইসরাইলদের বাদশাহ্?”
23. তারপর বাদশাহ্ ওয়াদা করে শিমিয়িকে বললেন, “তোমাকে হত্যা করা হবে না।”
24. এর পর তালুতের নাতি মফীবোশৎ বাদশাহ্র সংগে দেখা করবার জন্য আসল। বাদশাহ্ চলে যাবার পর থেকে তাঁর নিরাপদে ফিরে আসবার দিন পর্যন্ত সে নিজের পায়ের যত্ন করে নি, দাড়ি ছাঁটে নি এবং কাপড়-চোপড়ও ধোয় নি।
25. বাদশাহ্ জেরুজালেমে ফিরে আসলে পর মফীবোশৎ তাঁর সংগে দেখা করবার জন্য আসল। তখন বাদশাহ্ তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “মফীবোশৎ, তুমি আমার সংগে কেন গেলে না?”
26. সে বলল, “আমার প্রভু মহারাজ, আপনার গোলাম আমি খোঁড়া, তাই বলেছিলাম, ‘আমার গাধার উপর গদি চাপিয়ে আমি তার উপরে চড়ে বাদশাহ্র সংগে যাব।’ কিন্তু আমার চাকর সীবঃ আমার সংগে বেঈমানী করেছিল।
27. আমার প্রভু মহারাজের কাছে সে আমার দুর্নাম করেছে। আমার প্রভু মহারাজ আল্লাহ্র একজন ফেরেশতার মত; তাই আমার উপর আপনার যা খুশী তা-ই করুন।
28. আমার দাদার বংশধরেরা আমার প্রভু মহারাজের কাছে মৃত্যুর উপযুক্ত, কিন্তু তবুও আপনার যে লোকেরা আপনার টেবিলে খেতে বসে আপনি আপনার এই গোলামকেও তাদের মধ্যে একটা জায়গা দিয়েছিলেন। তাহলে মহারাজের কাছে আর অনুরোধ করবার আমার কি অধিকার আছে?”
29. বাদশাহ্ তাকে বললেন, “তোমার আর কিছু বলবার দরকার নেই। তুমি আর সীবঃ জমাজমি ভাগ করে নাও।”
30. মফীবোশৎ বাদশাহ্কে বলল, “সে-ই সব কিছু নিক। আমার প্রভু মহারাজ নিরাপদে বাড়ী ফিরে এসেছেন সেটাই আমার পক্ষে যথেষ্ট।”
31. বাদশাহ্ জেরুজালেমে ফিরে আসবার আগে গিলিয়দীয় বর্সিল্লয় রোগলীম থেকে এসে বাদশাহ্কে বিদায় দেবার জন্য তাঁর সংগে জর্ডান নদীর পারে এসেছিলেন।
32. বর্সিল্লয় খুব বুড়ো হয়ে গিয়েছিলেন; তাঁর বয়স ছিল আশি বছর। বাদশাহ্ যখন মহনয়িমে ছিলেন তখন তিনিই তাঁর জন্য খাবার-দাবারের ব্যবস্থা করেছিলেন, কারণ তিনি খুব ধনী লোক ছিলেন।
33. বাদশাহ্ বর্সিল্লয়কে বললেন, “আমার সংগে পার হয়ে এসে জেরুজালেমে আমার কাছে থাকুন। আমিই আপনাকে পালন করব।”
34. কিন্তু জবাবে বর্সিল্লয় বাদশাহ্কে বললেন, “আমি আর কয় বছরই বা বাঁচব যে, আমি বাদশাহ্র সংগে জেরুজালেমে যাব?
35. আমার বয়স এখন আশি বছর। কোনটা ভাল আর কোনটা খারাপ তা কি এখন আর আমি বলতে পারি? আপনার গোলাম আমি এখন যা খাই তার স্বাদ কি আমি বুঝতে পারি? গায়ক-গায়িকাদের গান কি আমি এখনও শুনতে পাই? আপনার এই গোলাম কেন আমার প্রভু মহারাজের একটা বাড়তি বোঝা হবে?