২ বাদশাহ্‌নামা 10:12-13-26 Kitabul Mukkadas (MBCL)

2-3. “আপনাদের মালিকের বংশধরেরা আপনাদের কাছে আছে এবং রথ, ঘোড়া, দেয়াল-ঘেরা শহর আর অস্ত্রশস্ত্রও আছে। কাজেই এই চিঠি পাওয়ামাত্র আপনাদের মালিকের সব চেয়ে ভাল ও যোগ্য বংশধরকে বেছে নিয়ে আহাবের সিংহাসনে বসান, তারপর মালিকের বংশের জন্য যুদ্ধ করুন।”

4. কিন্তু তাঁরা ভীষণ ভয় পেয়ে বললেন, “দু’জন বাদশাহ্‌ যখন যেহূর বিরুদ্ধে দাঁড়াতে পারলেন না তখন আমরা কি করে পারব?”

5. কাজেই রাজবাড়ীর পরিচালক, শহরের শাসনকর্তা, বৃদ্ধ নেতারা এবং আহাবের বংশধরদের রক্ষকেরা যেহূকে এই কথা বলে পাঠালেন, “আমরা আপনার গোলাম। আপনি যা বলবেন আমরা তা-ই করব। আমরা কাউকেই বাদশাহ্‌ করব না; আপনি যা ভাল মনে করেন তা-ই করুন।”

6. তখন যেহূ তাদের কাছে এই বলে দ্বিতীয় চিঠি লিখলেন, “আপনারা যদি আমার পক্ষে থাকেন এবং আমার হুকুম পালন করতে চান তবে আপনাদের মালিকের বংশধরদের মাথাগুলো কেটে নিয়ে আগামী কাল এই সময়ে যিষ্রিয়েলে আমার কাছে চলে আসুন।”আহাবের সেই সত্তরজন বংশধর তখন শহরের প্রধান লোকদের কাছে ছিল। তাঁরা তাদের দেখাশোনা করতেন।

7. যেহূর চিঠিটা পৌঁছাবার পর সেই লোকেরা সেই সত্তরজনের সবাইকে ধরে হত্যা করলেন। তারপর টুকরিতে করে মাথাগুলো যিষ্রিয়েলে যেহূর কাছে পাঠিয়ে দিলেন।

8. তখন একজন লোক এসে যেহূকে বলল, “ওরা তাদের মাথা নিয়ে এসেছে।”তখন যেহূ হুকুম দিলেন, “ওগুলো দু’টা গাদা করে শহর-দরজায় ঢুকবার পথে সকাল পর্যন্ত রেখে দাও।”

9. পরের দিন সকালে যেহূ বাইরে গেলেন। তিনি সমস্ত লোকদের সামনে দাঁড়িয়ে বললেন, “আপনাদের কোন দোষ নেই। আমিই আমার মালিকের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে তাঁকে হত্যা করেছি, কিন্তু এদের সবাইকে হত্যা করল কে?

12-13. এর পর যেহূ বের হয়ে সামেরিয়ার দিকে চললেন। পথে রাখালদের গ্রাম বৈৎ-একদে এহুদার বাদশাহ্‌ অহসিয়ের বংশের কয়েকজন লোকের সংগে তাঁর দেখা হল। তিনি তাদের জিজ্ঞাসা করলেন, “আপনারা কারা?” তারা বলল, “আমরা অহসিয়ের বংশের লোক। আমরা রাণী ঈষেবলের সন্তানদের ও রাজপরিবারের সবাইকে সালাম জানাতে এসেছি।”

14. তখন যেহূ হুকুম দিলেন, “ওদের জীবন্ত ধর।” লোকেরা তাদের জীবন্তই ধরল এবং সেখানকার কূয়ার কাছে তাদের হত্যা করল। তারা সংখ্যায় ছিল বিয়াল্লিশজন। তাদের মধ্যে একজনকেও তিনি বাঁচিয়ে রাখলেন না।

15. সেখান থেকে চলে যাবার পর রেখবের ছেলে যিহোনাদবের সংগে যেহূর দেখা হল। তিনি যেহূর সংগে দেখা করতে আসছিলেন। যেহূ তাঁকে সালাম জানিয়ে বললেন, “আমি যেমন আপনার পক্ষে আছি তেমনি আপনিও কি আমার পক্ষে আছেন?”জবাবে যিহোনাদব বললেন, “জ্বী, আছি।”যেহূ বললেন, “যদি তা-ই হয় তবে আপনার হাত বাড়িয়ে দিন।” যিহোনাদব তা-ই করলেন আর যেহূ তাঁকে রথে তুলে নিলেন।

16. তারপর যেহূ বললেন, “আমার সংগে আসুন এবং মাবুদের জন্য আমার আগ্রহ কতখানি তা দেখুন।” এই বলে তিনি তাঁকে তাঁর রথে করে নিয়ে চললেন।

17. যেহূ সামেরিয়াতে এসে আহাবের বংশের বাদবাকী সব লোকদের হত্যা করলেন। মাবুদ ইলিয়াসকে যেমন বলেছিলেন সেই অনুসারেই যেহূ তাদের ধ্বংস করলেন।

18. তারপর যেহূ সমস্ত লোকদের জমায়েত করে তাদের বললেন, “আহাব বাল দেবতার পূজা সামান্যই করেছেন, কিন্তু যেহূ তাঁর পূজা করবে অনেক বেশী।

19. এখন বাল দেবতার সব নবী, পূজাকারী ও পুরোহিতদের আপনারা ডেকে আনুন। দেখবেন যেন কেউ বাদ না পড়ে, কারণ বাল দেবতার উদ্দেশে আমি একটা মস্ত বড় পশুবলির ব্যবস্থা করতে যাচ্ছি। এতে কেউ যদি না আসে তবে তাকে হত্যা করা হবে।” কিন্তু আসলে যেহূ বাল দেবতার পূজাকারীদের ধ্বংস করবার জন্যই এই ছলনা করছিলেন।

20. যেহূ বললেন, “বাল দেবতার উদ্দেশে একটা সভা ডাকা হোক।” কাজেই সেই কথা লোকেরা ঘোষণা করে দিল।

21. যেহূ তখন ইসরাইলের সব জায়গায় খবর পাঠালেন। তাতে বাল দেবতার সমস্ত পূজাকারীরা এসে হাজির হল, কেউই অনুপস্থিত রইল না। তারা বাল দেবতার মন্দিরে ঢুকলে পর এমন ভীড় হল যে, মন্দিরের এপাশ থেকে ওপাশ পর্যন্ত লোকে ভরে গেল।

22. তখন যেহূ পোশাক-রক্ষককে বললেন, “বাল দেবতার পূজাকারী সকলের জন্য পোশাক নিয়ে আসুন।” তাতে সে তাদের জন্য পোশাক বের করে আনল।

23. তারপর যেহূ ও রেখবের ছেলে যিহোনাদব বাল দেবতার মন্দিরে ঢুকলেন। যেহূ বাল দেবতার পূজাকারীদের বললেন, “আপনারা ভাল করে খুঁজে দেখুন যাতে মাবুদের গোলামদের মধ্যে কেউ এখানে আপনাদের মধ্যে না থাকে, শুধু বাল দেবতার পূজাকারীরাই থাকবে।”

24. তখন তাঁরা পশুবলি ও পোড়ানো-উৎসর্গ করতে গেলেন। যেহূ আশিজন লোককে এই বলে সাবধান করে দিয়ে বাইরে দাঁড় করিয়ে রেখেছিলেন, “আমি তোমাদের হাতে যাদের ভার দিচ্ছি তাদের একজনকেও যদি কেউ পালিয়ে যেতে দেয় তবে পালিয়ে যাওয়া লোকের প্রাণের বদলে তার প্রাণ যাবে।”

25. যেহূ পোড়ানো-উৎসর্গ শেষ করবার সংগে সংগে পাহারাদার ও সেনাপতিদের হুকুম দিলেন, “তোমরা ভিতরে ঢুকে ওদের হত্যা কর; একজনও যেন পালিয়ে যেতে না পারে।” তখন তারা তলোয়ার দিয়ে তাদের কেটে ফেলল। পাহারাদার ও সেনাপতিরা লাশগুলো মন্দিরের বাইরে ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে ভিতরের ঘরে গেল।

26. বাল দেবতার মন্দির থেকে পূজার পাথরগুলো তারা বের করে এনে পুড়িয়ে দিল।

২ বাদশাহ্‌নামা 10