22. একদিন ঈসা ও তাঁর সাহাবীরা একটা নৌকায় উঠলেন। তিনি সাহাবীদের বললেন, “চল, আমরা সাগরের ওপারে যাই।”সাহাবীরা নৌকা ছাড়লেন।
23. নৌকা চলতে থাকলে ঈসা ঘুমিয়ে পড়লেন। সেই সময় হঠাৎ সাগরে ঝড় উঠল এবং নৌকাটা পানিতে পূর্ণ হতে লাগল। এতে তাঁরা খুব বিপদে পড়লেন।
24. তাঁরা ঈসার কাছে গিয়ে তাঁকে জাগিয়ে বললেন, “হুজুর, হুজুর, আমরা যে মরলাম!”তখন ঈসা উঠে বাতাস ও পানির ঢেউকে ধমক্ দিলেন। তাতে বাতাস আর ঢেউ থামল এবং সব কিছু শান্ত হয়ে গেল।
25. তিনি সাহাবীদের বললেন, “তোমাদের ঈমান কোথায়?”সাহাবীরা ভয়ে আশ্চর্য হয়ে নিজেদের মধ্যে বলাবলি করতে লাগলেন, “ইনি কে, যিনি বাতাস ও পানিকে হুকুম দিলে পর তারাও তাঁর কথা শোনে?”
26. এর পরে ঈসা ও তাঁর সাহাবীরা সাগর পার হয়ে গালীল প্রদেশের উল্টা দিকে গাদারীয়দের এলাকায় গেলেন।
27. তিনি যখন নৌকা থেকে নামলেন তখন সেখানকার গ্রামের একজন লোক তাঁর কাছে আসল। সেই লোকটিকে অনেকগুলো ভূতে পেয়েছিল বলে সে অনেক দিন ধরে কাপড়-চোপড় পরত না এবং বাড়ীতে না থেকে কবরস্থানে থাকত।
28. ঈসাকে দেখে সে চিৎকার করে উঠল এবং তাঁর সামনে মাটিতে পড়ে জোরে জোরে বলল, “আল্লাহ্তা’লার পুত্র ঈসা, আমার সংগে আপনার কি সম্বন্ধ? দয়া করে আপনি আমাকে যন্ত্রণা দেবেন না।”
29. লোকটি এই কথা বলল কারণ ঈসা সেই ভূতকে তার মধ্য থেকে বের হয়ে যেতে হুকুম দিয়েছিলেন। সেই ভূত বার বার লোকটিকে আঁকড়ে ধরত। যদিও তখন তার হাত-পা শিকল দিয়ে বাঁধা থাকত এবং তাকে পাহারা দেওয়া হত তবুও সে সেই শিকল ছিঁড়ে ফেলত, আর সেই ভূত তাকে নির্জন জায়গায় তাড়িয়ে নিয়ে যেত।
30. ঈসা তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমার নাম কি?”সে বলল, “বাহিনী,” কারণ অনেকগুলো ভূত তার ভিতরে ঢুকেছিল।
31. তখন সেই ভূতগুলো ঈসাকে কাকুতি-মিনতি করতে লাগল যেন তিনি তাদের হাবিয়া-দোজখে না পাঠান।
32-33. সেখানে পাহাড়ের ধারে খুব বড় এক পাল শূকর চরছিল। ভূতগুলো ঈসাকে অনুরোধ করল যেন তিনি সেই শূকরগুলোর ভিতরে ঢুকতে তাদের অনুমতি দেন। তিনি অনুমতি দিলে পর তারা লোকটির মধ্য থেকে বের হয়ে শূকরগুলোর ভিতরে ঢুকল। তাতে সেই শূকরের পাল সাগরের ঢালু পার দিয়ে জোরে দৌড়ে গিয়ে পানিতে ডুবে মরল।
34. যারা শূকর চরাচ্ছিল তারা এই ঘটনা দেখে দৌড়ে গিয়ে সেই গ্রামে ও তার আশেপাশের সব জায়গায় এই খবর দিল।
35. কি হয়েছে তা দেখবার জন্য তখন লোকেরা বের হয়ে আসল। ঈসার কাছে এসে তারা দেখল, যার মধ্য থেকে ভূতগুলো বের হয়ে গেছে সে কাপড়-চোপড় পরে সুস্থ মনে ঈসার পায়ের কাছে বসে আছে। এ দেখে তারা ভয় পেল।
36. যারা সেই ঘটনা দেখেছিল তারা ঐ লোকদের কাছে বলল কেমন করে লোকটা সুস্থ হয়েছে।
37. তখন গাদারীয়দের এলাকার সমস্ত লোক ঈসাকে তাদের কাছ থেকে চলে যেতে অনুরোধ করল, কারণ তারা ভীষণ ভয় পেয়েছিল।তখন ঈসা ফিরে যাবার জন্য নৌকায় উঠলেন।
38. যে লোকটির মধ্য থেকে ভূতগুলো বের হয়ে গিয়েছিল সেই লোকটি ঈসাকে অনুরোধ করল যেন সে তাঁর সংগে যেতে পারে। ঈসা কিন্তু তাকে এই কথা বলে বাড়ী পাঠিয়ে দিলেন,
39. “তুমি বাড়ী ফিরে যাও এবং আল্লাহ্ তোমার জন্য কত বড় কাজ করেছেন তা প্রচার কর।”সেই লোকটি তখন গ্রামে গেল এবং ঈসা তার জন্য কত বড় কাজ করেছেন তা সমস্ত জায়গায় বলে বেড়াতে লাগল।
40. ঈসা অন্য পারে ফিরে যাবার পর সেখানকার লোকেরা তাঁকে খুশী মনে গ্রহণ করল, কারণ তারা তাঁর জন্য অপেক্ষা করছিল।
41. পরে যায়ীর নামে মজলিস-খানার একজন নেতা এসে ঈসার পায়ের উপর পড়লেন।
42. তিনি ঈসাকে তাঁর বাড়ীতে আসবার জন্য কাকুতি-মিনতি করতে লাগলেন, কারণ তাঁর বারো বছরের একমাত্র মেয়েটি মরবার মত হয়েছিল।ঈসা যখন যাচ্ছিলেন তখন লোকেরা তাঁর চারদিকে ভিড় করে ঠেলাঠেলি করছিল।