2. সেখানে একজন রোমীয় শত-সেনাপতির গোলাম অসুস্থ হয়ে মরবার মত হয়েছিল। এই গোলামকে সেই সেনাপতি খুব ভালবাসতেন।
3. তিনি ঈসার বিষয় শুনে ইহুদীদের কয়েকজন বৃদ্ধনেতাকে ঈসার কাছে অনুরোধ করতে পাঠালেন যেন তিনি এসে তাঁর গোলামকে সুস্থ করেন।
4. সেই নেতারা ঈসার কাছে এসে তাঁকে বিশেষভাবে অনুরোধ করে বললেন, “আপনি যাঁর জন্য এই কাজ করবেন তিনি এর উপযুক্ত,
5. কারণ তিনি আমাদের লোকদের ভালবাসেন এবং আমাদের মজলিস-খানা তিনিই তৈরী করিয়ে দিয়েছেন।”
6. তখন ঈসা তাঁদের সংগে চললেন। তিনি সেই বাড়ীর কাছে আসলে পর সেই সেনাপতি তাঁর বন্ধুদের দিয়ে বলে পাঠালেন, “হুজুর, আর কষ্ট করবেন না, কারণ আপনি যে আমার বাড়ীতে ঢোকেন তার যোগ্য আমি নই।
7. সেইজন্য আপনার কাছে যাবার উপযুক্তও আমি নিজেকে মনে করি নি। আপনি কেবল মুখে বলুন, তাতেই আমার গোলাম ভাল হয়ে যাবে।
8. আমি এই কথা জানি, কারণ আমাকেও অন্যের কথামত চলতে হয় এবং সৈন্যেরাও আমার কথামত চলে। আমি একজনকে ‘যাও’ বললে সে যায়, অন্যজনকে ‘এস’ বললে সে আসে, আর আমার গোলামকে ‘এটা কর’ বললে সে তা করে।”
9. এই কথা শুনে ঈসা আশ্চর্য হলেন এবং যে সব লোকেরা ভিড় করে তাঁর পিছনে আসছিল তাদের দিকে ফিরে তিনি বললেন, “আমি আপনাদের বলছি, বনি-ইসরাইলদের মধ্যেও এত বড় বিশ্বাস আমি কখনও দেখি নি।”
18-19. নবী ইয়াহিয়ার সাহাবীরা এই সব ঘটনার কথা ইয়াহিয়াকে জানাল। তখন ইয়াহিয়া তাঁর দু’জন সাহাবীকে ডেকে ঈসার কাছে এই কথা জিজ্ঞাসা করে পাঠালেন, “যাঁর আসবার কথা আছে আপনিই কি তিনি, না আমরা অন্য কারও জন্য অপেক্ষা করব?”
20. সেই লোকেরা ঈসার কাছে এসে বলল, “তরিকাবন্দীদাতা ইয়াহিয়া আপনার কাছে আমাদের জিজ্ঞাসা করতে পাঠিয়েছেন, ‘যাঁর আসবার কথা আছে আপনিই কি তিনি, না আমরা অন্য কারও জন্য অপেক্ষা করব?”
21. তখন ঈসা অনেক লোককে রোগ থেকে ও ভীষণ যন্ত্রণা থেকে সুস্থ করলেন এবং ভূতে পাওয়া লোকদের ভাল করলেন আর অনেক অন্ধ লোককেও দেখবার শক্তি দিলেন।
22. এই সব করবার পরে ঈসা ইয়াহিয়ার সাহাবীদের প্রশ্নের জবাবে বললেন, “তোমরা যা দেখলে ও শুনলে তা গিয়ে ইয়াহিয়াকে বল। তাঁকে জানাও যে, অন্ধেরা দেখছে, খোঁড়ারা হাঁটছে, চর্মরোগীরা পাক-সাফ হচ্ছে, বধির লোকেরা শুনছে, মৃতেরা বেঁচে উঠছে এবং গরীবদের কাছে সুসংবাদ তবলিগ করা হচ্ছে।
23. আর ধন্য সে-ই, যে আমাকে নিয়ে মনে কোন বাধা না পায়।”
24. ইয়াহিয়া যাদের পাঠিয়েছিলেন সেই লোকেরা চলে গেলে পর ঈসা লোকদের কাছে ইয়াহিয়ার বিষয়ে বলতে লাগলেন, “আপনারা মরুভূমিতে কি দেখতে গিয়েছিলেন? বাতাসে দোলা নল-খাগড়া?
25. তা না হলে কি দেখতে গিয়েছিলেন? সুন্দর কাপড় পরা একজন লোককে কি? যারা দামী দামী কাপড় পরে ও জাঁকজমকের সংগে বাস করে তারা তো রাজবাড়ীতে থাকে।
26. তা না হলে কি দেখতে গিয়েছিলেন? কোন নবীকে কি? জ্বী, আমি আপনাদের বলছি, তিনি নবীর চেয়েও বড়।
27. ইয়াহিয়াই সেই লোক যাঁর বিষয়ে পাক-কিতাবে লেখা আছে,‘দেখ, আমি তোমার আগে আমার সংবাদদাতাকে পাঠাচ্ছি।সে তোমার আগে গিয়ে তোমার পথ প্রস্তুত করবে।’
28. আমি আপনাদের বলছি, মানুষের মধ্যে কেউই ইয়াহিয়ার চেয়ে বড় নয়; তবুও আল্লাহ্র রাজ্যের মধ্যে সবচেয়ে যে ছোট সেও ইয়াহিয়ার চেয়ে মহান।”
29. (সমস্ত সাধারণ লোকেরা ও খাজনা-আদায়কারীরা ইয়াহিয়ার তবলিগ শুনেছিল এবং তাঁর কাছে তরিকাবন্দী গ্রহণ করে আল্লাহ্কে ন্যায়বান বলে স্বীকার করে নিয়েছিল।
30. কিন্তু ফরীশীরা ও আলেমেরা ইয়াহিয়ার কাছে তরিকাবন্দী গ্রহণ করেন নি বলে নিজেদের জন্য আল্লাহ্র উদ্দেশ্যকে তাঁরা অগ্রাহ্য করেছিলেন)।
31. ঈসা আরও বললেন, “তা হলে এই কালের লোকদের আমি কাদের সংগে তুলনা করব? তারা কি রকম?
32. তারা এমন ছেলেমেয়েদের মত যারা বাজারে বসে একে অন্যকে ডেকে বলে, ‘আমরা তোমাদের জন্য বাঁশী বাজালাম কিন্তু তোমরা নাচলে না; আমরা বিলাপের গান গাইলাম কিন্তু তোমরা কাঁদলে না।’
33. তরিকাবন্দীদাতা ইয়াহিয়া এসে রুটি বা আংগুর-রস খেলেন না বলে আপনারা বলছেন, ‘তাকে ভূতে পেয়েছে।’
34. আর ইব্ন্তেআদম এসে খাওয়া-দাওয়া করলেন বলে আপনারা বলছেন, ‘দেখ, এই লোকটা পেটুক ও মদখোর, খাজনা-আদায়কারী ও খারাপ লোকদের বন্ধু।’