3. পীলাত ঈসাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমি কি ইহুদীদের বাদশাহ্?”ঈসা বললেন, “আপনি ঠিক কথাই বলছেন।”
4. তখন পীলাত প্রধান ইমামদের ও সমস্ত লোকদের বললেন, “আমি তো এই লোকটির কোন দোষই দেখতে পাচ্ছি না।”
5. কিন্তু তাঁরা জিদ করে বলতে লাগলেন, “এহুদিয়া প্রদেশের সব জায়গায় শিক্ষা দিয়ে এ লোকদের ক্ষেপিয়ে তুলছে। গালীল প্রদেশ থেকে সে শুরু করেছে, আর এখন এখানে এসেছে।”
6. এই কথা শুনে পীলাত জিজ্ঞাসা করলেন ঈসা গালীল প্রদেশের লোক কি না।
7. শাসনকর্তা হেরোদের শাসনের অধীনে যে প্রদেশ আছে, ঈসা সেই জায়গার লোক জানতে পেরে পীলাত তাঁকে হেরোদের কাছে পাঠিয়ে দিলেন। সেই সময় হেরোদও জেরুজালেমে ছিলেন।
8. ঈসাকে দেখে হেরোদ খুব খুশী হলেন। তিনি ঈসার সম্বন্ধে অনেক কথা শুনেছিলেন, তাই তিনি অনেক দিন ধরে তাঁকে দেখতে চাইছিলেন। হেরোদ আশা করেছিলেন ঈসা তাঁকে কোন অলৌকিক কাজ করে দেখাবেন।
9. তিনি ঈসাকে অনেক প্রশ্ন করলেন, কিন্তু ঈসা কোন কথারই জবাব দিলেন না।
24-25. বিদ্রোহ ও খুনের জন্য যাকে জেলে দেওয়া হয়েছিল লোকেরা তাকেই চেয়েছিল; সেইজন্য পীলাত সেই লোককে ছেড়ে দিলেন এবং লোকদের ইচ্ছামত ঈসাকে হত্যা করবার জন্য তাদের হাতে দিলেন।
26. সৈন্যেরা যখন ঈসাকে নিয়ে যাচ্ছিল তখন শিমোন নামে কুরীণী শহরের একজন লোক গ্রামের দিক থেকে আসছিল। সৈন্যেরা তাকে জোর করে ধরে ক্রুশটা তার কাঁধে তুলে দিল যেন সে ঈসার পিছনে তা বয়ে নিয়ে যেতে পারে।
27. অনেক লোক ঈসার পিছনে পিছনে যাচ্ছিল। তাদের মধ্যে অনেক স্ত্রীলোকও ছিল। তারা বুক চাপ্ড়ে কাঁদছিল।
28. ঈসা তাদের দিকে ফিরে বললেন, “জেরুজালেমের মেয়েরা, আমার জন্য কেঁদো না। তোমাদের নিজেদের জন্য এবং তোমাদের ছেলেমেয়েদের জন্য কাঁদ,
29. কারণ এমন দিন আসছে যখন লোকে বলবে, ‘যাদের কখনও ছেলেমেয়ে হয় নি এবং যারা কখনও বুকের দুধ শিশুদের খাওয়ায় নি সেই বন্ধ্যা স্ত্রীলোকেরা ধন্যা।’
30. সেই সময়ে লোকে বড় বড় পাহাড়কে বলবে, ‘আমাদের উপর পড়,’ আর ছোট ছোট পাহাড়কে বলবে, ‘আমাদের ঢেকে রাখ।’
31. গাছ সবুজ থাকতে যদি লোকে এই রকম করে তবে গাছ শুকনা হলে পর কিনা হবে!”
32. সৈন্যেরা দু’জন দোষী লোককেও হত্যা করবার জন্য ঈসার সংগে নিয়ে চলল।
33. যে জায়গাটাকে মাথার খুলি বলা হত সেখানে পৌঁছে তারা ঈসাকে ও সেই দু’জন দোষীকে ক্রুশে দিল- একজনকে ঈসার ডান দিকে ও অন্যজনকে বাঁদিকে।
34. তখন ঈসা বললেন, “পিতা, এদের মাফ কর, কারণ এরা কি করছে তা জানে না।”তারা গুলিবাঁট করে ঈসার কাপড়-চোপড় নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নিল।
35. লোকেরা দাঁড়িয়ে দেখছিল। ধর্ম-নেতারা ঈসাকে ঠাট্টা করে বললেন, “সে তো অন্যদের রক্ষা করত। যদি সে আল্লাহ্র মসীহ্, তাঁর বাছাই-করা বান্দা হয় তবে নিজেকে রক্ষা করুক!”
36. সৈন্যেরাও তাঁকে ঠাট্টা করতে লাগল। তারা ঈসাকে খেতে দেবার জন্য তাঁর কাছে সিরকা নিয়ে গিয়ে বলল,
37. “তুমি যদি ইহুদীদের বাদশাহ্ হও তবে নিজেকে রক্ষা কর।”
38. ক্রুশে তাঁর মাথার উপরের দিকে একটা ফলকে এই কথা লেখা ছিল, “এই লোকটি ইহুদীদের বাদশাহ্।”
39. যে দু’জন দোষী লোককে সেখানে ক্রুশে টাংগানো হয়েছিল তাদের মধ্যে একজন ঈসাকে টিট্কারি দিয়ে বলল, “তুমি নাকি মসীহ্? তাহলে নিজেকে ও আমাদের রক্ষা কর।”
40. তখন অন্য লোকটি তাকে বকুনি দিয়ে বলল, “তুমি কি আল্লাহ্কে ভয় কর না? তুমি তো একই রকম শাস্তি পাচ্ছ।
41. আমরা উচিত শাস্তি পাচ্ছি। আমাদের যা পাওনা আমরা তা-ই পাচ্ছি, কিন্তু এই লোকটি তো কোন দোষ করে নি।”
42. তারপর সে বলল, “ঈসা, আপনি যখন রাজত্ব করতে ফিরে আসবেন তখন আমার কথা মনে করবেন।”
43. জবাবে ঈসা তাকে বললেন, “আমি তোমাকে সত্যি বলছি, তুমি আজকেই আমার সংগে জান্নাতুল-ফেরদৌসে উপস্থিত হবে।”