2. বাড়ীর সবচেয়ে পুরানো যে গোলামের উপর তাঁর সব কিছুর ভার ছিল তাকে তিনি একদিন বললেন, “তোমার হাতখানা আমার রানের নীচে রাখ।
3. যিনি বেহেশত ও দুনিয়ার আল্লাহ্ সেই মাবুদের সামনে আমি তোমাকে এই কসম খাওয়াচ্ছি: আমি যে কেনানীয়দের মধ্যে বাস করছি তাদের মধ্য থেকে কোন মেয়েকে আমার ছেলের স্ত্রী হিসাবে তুমি বেছে নেবে না।
4. তার বদলে তুমি আমার দেশে গিয়ে আমার বংশের লোকদের মধ্য থেকে একটি মেয়েকে আমার ছেলে ইসহাকের জন্য বেছে নেবে।”
5. এই কথা শুনে সেই গোলাম ইব্রাহিমকে বলল, “যদি সেই মেয়ে আমার সংগে এই দেশে আসতে রাজী না হয়, তাহলে যে দেশ ছেড়ে আপনি এসেছেন সেই দেশেই কি আবার আপনার ছেলেকে আমি নিয়ে যাব?”
6. ইব্রাহিম বললেন, “সাবধান, আমার ছেলেকে তুমি কখনও সেখানে নিয়ে যাবে না।
7. বেহেশতের আল্লাহ্ মাবুদ আমাকে আমার পিতার বাড়ী-ঘর ও আমার জন্মস্থান থেকে বের করে এনেছেন। তিনি আমার সংগে কথা বলেছিলেন এবং কসম খেয়ে বলেছিলেন যে, এই দেশ তিনি আমার বংশকে দেবেন। তিনি তোমার আগেই তাঁর ফেরেশতাকে সেখানে পাঠিয়ে দেবেন যাতে আমার ছেলের স্ত্রী হওয়ার জন্য তুমি সেখান থেকে একটি মেয়ে নিয়ে আসতে পার।
8. কিন্তু সেই মেয়ে যদি তোমার সংগে আসতে রাজী না হয়, তবে আমার এই কসম থেকে তুমি মুক্ত। কিন্তু আমার ছেলেকে তুমি কখনও সেখানে নিয়ে যাবে না।”
9. তখন সেই গোলাম তার মালিক ইব্রাহিমের ঊরুর নীচে হাত রেখে এই ব্যাপারে তাঁর কাছে কসম খেল।
16-17. রেবেকা ছিলেন খুব সুন্দরী, অবিবাহিতা আর সতী। তিনি কূয়া থেকে কলসী ভরে যখন উঠে আসছিলেন তখন ইব্রাহিমের গোলাম দৌড়ে তাঁর কাছে গিয়ে বলল, “দয়া করে আপনার কলসী থেকে আমাকে একটু পানি খেতে দিন।”
18. রেবেকা বললেন, “এই নিন, পানি খান।” এই কথা বলেই তিনি তাড়াতাড়ি করে কলসীটা কাঁধ থেকে হাতে নিয়ে তাকে পানি খেতে দিলেন।
19. পানি খাওয়াবার পর রেবেকা তাকে বললেন, “আমি আপনার উটগুলোর জন্যও পানি তুলে দেব যতক্ষণ না ওদের পানি খাওয়া শেষ হয়।”
20. এই বলে তিনি তাড়াতাড়ি করে পশুদের পানি খাওয়াবার গামলাটায় তাঁর কলসীর পানি ঢেলে দিয়ে আবার দৌড়ে কূয়ার কাছে গেলেন। এইভাবে তিনি সব উটগুলোর জন্য পানি তুলে দিলেন।
21. মাবুদ তার এই যাত্রা সফল করেছেন কি না তা জানবার জন্য সেই গোলাম চুপ করে রেবেকাকে লক্ষ্য করতে লাগল।
22. উটগুলোর পানি খাওয়া শেষ হলে পর সে প্রায় ছয় গ্রাম ওজনের একটা সোনার নথ আর দুই হাতের জন্য একশো বিশ গ্রাম ওজনের দু’টি সোনার বালা বের করে রেবেকাকে দিয়ে বলল,
23. “আপনি কার মেয়ে? আপনি কি বলতে পারেন আপনার পিতার বাড়ীতে আমাদের থাকবার জায়গা হবে কি না?”
24. রেবেকা বললেন, “আমার পিতার নাম বথূয়েল। তিনি মিল্কা ও নাহুরের ছেলে।”
25. তিনি আরও বললেন, “আমাদের বাড়ীতে যথেষ্ট খড় ও ভূষি আছে এবং থাকবার জায়গাও রয়েছে।”
26. তখন সেই গোলাম মাবুদকে সেজদা করে বলল,
27. “সমস্ত প্রশংসা মাবুদের, যিনি আমার মালিক ইব্রাহিমের আল্লাহ্! তিনি আমার মালিককে তাঁর দেওয়া কথা রাখতে ও বিশ্বস্ততা দেখাতে ভুলে যান নি। আমাকেও তিনি পথ দেখিয়ে আমার মালিকের ভাইয়ের বাড়ীতে নিয়ে এসেছেন।”
28. রেবেকা কিন্তু দৌড়ে গিয়ে বাড়ীর সবাইকে আর বাড়ীর প্রধান তাঁর মাকে এই কথা জানালেন।
29-30. রেবেকার ভাইয়ের নাম ছিল লাবন। বোনের হাতে বালা ও নাকে নথ দেখে এবং লোকটি যা বলেছিল তা বোনের মুখে শুনে তিনি শহরের বাইরে কূয়ার পাশে সেই লোকটির কাছে ছুটে চললেন। সেখানে গিয়ে তিনি দেখলেন, লোকটি কূয়ার কাছে উটগুলোর পাশে দাঁড়িয়ে আছে।
31. লাবন তাকে বললেন, “হে মাবুদের দোয়ার পাত্র, আসুন। কেন বাইরে দাঁড়িয়ে আছেন? আমি আপনাদের জন্য ঘর এবং উটগুলোর জন্য জায়গা ঠিক করে রেখে এসেছি।”
32. এই কথা শুনে সেই গোলাম তাঁদের বাড়ীতে গেল। লাবন উটগুলোর বোঝা নামিয়ে রেখে তাদের খড় আর ভূষি খেতে দিলেন। তারপর তিনি সেই গোলাম ও তার সংগের লোকদের পা ধোয়ার পানি দিলেন।
33. কিন্তু যখন তার সামনে খাবার দেওয়া হল তখন সে বলল, “আমি কেন এখানে এসেছি তা খুলে না বলা পর্যন্ত কিছুই মুখে দেব না।”লাবন বললেন, “আচ্ছা, বলুন।”
34. তখন সে বলল, “আমি ইব্রাহিমের গোলাম।
35. আমার মালিককে মাবুদ অনেক দোয়া করেছেন; আজ তিনি খুব বড়লোক। মাবুদ তাঁকে অনেক গরু-ভেড়া, সোনা-রূপা, গোলাম ও বাঁদী এবং উট ও গাধা দিয়েছেন।