11. শহরটার বাইরে একটা কূয়া ছিল। সেই গোলাম সেখানে পৌঁছে তার উটগুলোকে সেই কূয়ার পাশে হাঁটু পেতে বসাল। তখন প্রায় সন্ধ্যার কাছাকাছি, মেয়েদের পানি তুলে নেবার সময়।
12. সেই গোলাম এই বলে মুনাজাত করল, “হে মাবুদ, আমার মালিক ইব্রাহিমের আল্লাহ্, আজ এর সব কিছু তুমি তোমার হাতে নাও এবং আমার মালিক ইব্রাহিমকে দেওয়া তোমার কথা রাখ।
13. দেখ, এই শহরের মেয়েরা পানি নিতে বের হয়ে আসছে, আর আমি এই কূয়ার কাছে দাঁড়িয়ে আছি।
14. ঐ মেয়েদের একজনকে আমি বলব, ‘আপনার কলসী নামিয়ে আমাকে পানি খেতে দিন।’ তার জবাবে যদি সেই মেয়ে বলে, ‘আপনি পানি খান, আর আপনার উটগুলোকেও আমি পানি খাওয়াব,’ তাহলে সেই মেয়েই যেন তোমার গোলাম ইসহাকের জন্য তোমার বেছে রাখা মেয়ে হয়। এতেই আমি জানতে পারব যে, তুমি আমার মালিককে দেওয়া তোমার কথা রেখেছ।”
15. তার কথা শেষ হতে না হতেই রেবেকা কলসী কাঁধে শহর থেকে বের হয়ে আসলেন। তিনি ছিলেন বথূয়েলের মেয়ে। বথূয়েল ছিলেন ইব্রাহিমের ভাই নাহুরের স্ত্রী মিল্কার ছেলে।
16-17. রেবেকা ছিলেন খুব সুন্দরী, অবিবাহিতা আর সতী। তিনি কূয়া থেকে কলসী ভরে যখন উঠে আসছিলেন তখন ইব্রাহিমের গোলাম দৌড়ে তাঁর কাছে গিয়ে বলল, “দয়া করে আপনার কলসী থেকে আমাকে একটু পানি খেতে দিন।”
18. রেবেকা বললেন, “এই নিন, পানি খান।” এই কথা বলেই তিনি তাড়াতাড়ি করে কলসীটা কাঁধ থেকে হাতে নিয়ে তাকে পানি খেতে দিলেন।
19. পানি খাওয়াবার পর রেবেকা তাকে বললেন, “আমি আপনার উটগুলোর জন্যও পানি তুলে দেব যতক্ষণ না ওদের পানি খাওয়া শেষ হয়।”
20. এই বলে তিনি তাড়াতাড়ি করে পশুদের পানি খাওয়াবার গামলাটায় তাঁর কলসীর পানি ঢেলে দিয়ে আবার দৌড়ে কূয়ার কাছে গেলেন। এইভাবে তিনি সব উটগুলোর জন্য পানি তুলে দিলেন।
21. মাবুদ তার এই যাত্রা সফল করেছেন কি না তা জানবার জন্য সেই গোলাম চুপ করে রেবেকাকে লক্ষ্য করতে লাগল।
22. উটগুলোর পানি খাওয়া শেষ হলে পর সে প্রায় ছয় গ্রাম ওজনের একটা সোনার নথ আর দুই হাতের জন্য একশো বিশ গ্রাম ওজনের দু’টি সোনার বালা বের করে রেবেকাকে দিয়ে বলল,
23. “আপনি কার মেয়ে? আপনি কি বলতে পারেন আপনার পিতার বাড়ীতে আমাদের থাকবার জায়গা হবে কি না?”
24. রেবেকা বললেন, “আমার পিতার নাম বথূয়েল। তিনি মিল্কা ও নাহুরের ছেলে।”
25. তিনি আরও বললেন, “আমাদের বাড়ীতে যথেষ্ট খড় ও ভূষি আছে এবং থাকবার জায়গাও রয়েছে।”
26. তখন সেই গোলাম মাবুদকে সেজদা করে বলল,
27. “সমস্ত প্রশংসা মাবুদের, যিনি আমার মালিক ইব্রাহিমের আল্লাহ্! তিনি আমার মালিককে তাঁর দেওয়া কথা রাখতে ও বিশ্বস্ততা দেখাতে ভুলে যান নি। আমাকেও তিনি পথ দেখিয়ে আমার মালিকের ভাইয়ের বাড়ীতে নিয়ে এসেছেন।”
28. রেবেকা কিন্তু দৌড়ে গিয়ে বাড়ীর সবাইকে আর বাড়ীর প্রধান তাঁর মাকে এই কথা জানালেন।
29-30. রেবেকার ভাইয়ের নাম ছিল লাবন। বোনের হাতে বালা ও নাকে নথ দেখে এবং লোকটি যা বলেছিল তা বোনের মুখে শুনে তিনি শহরের বাইরে কূয়ার পাশে সেই লোকটির কাছে ছুটে চললেন। সেখানে গিয়ে তিনি দেখলেন, লোকটি কূয়ার কাছে উটগুলোর পাশে দাঁড়িয়ে আছে।
31. লাবন তাকে বললেন, “হে মাবুদের দোয়ার পাত্র, আসুন। কেন বাইরে দাঁড়িয়ে আছেন? আমি আপনাদের জন্য ঘর এবং উটগুলোর জন্য জায়গা ঠিক করে রেখে এসেছি।”
32. এই কথা শুনে সেই গোলাম তাঁদের বাড়ীতে গেল। লাবন উটগুলোর বোঝা নামিয়ে রেখে তাদের খড় আর ভূষি খেতে দিলেন। তারপর তিনি সেই গোলাম ও তার সংগের লোকদের পা ধোয়ার পানি দিলেন।