11. তুমি তাদের সামনে সাগরকে দু’ভাগ করেছিলে, তাই তারা শুকনা জমির উপর দিয়ে পার হয়ে গিয়েছিল; কিন্তু যারা তাদের তাড়া করে আসছিল তুমি তাদের পানির স্রোতে পাথর ফেলবার মত করে গভীর পানিতে ফেলে দিয়েছিলে।
12. তুমি দিনের বেলায় মেঘের থাম দিয়ে তাদের চালিয়ে নিয়ে গিয়েছিলে আর রাতে আগুনের থাম দিয়ে তাদের যাওয়ার পথে আলো দিয়েছিলে।
13. “তুমি তুর পাহাড়ের উপরে নেমে এসেছিলে এবং বেহেশত থেকে তাদের সংগে কথা বলেছিলে। সেই সময় তুমি ন্যায্য নির্দেশ, সঠিক শরীয়ত এবং ভাল নিয়ম ও হুকুম তাদের দিয়েছিলে।
14. তোমার পবিত্র বিশ্রামবার সম্বন্ধে তুমি তাদের জানিয়েছিলে এবং তোমার গোলাম মূসার মধ্য দিয়ে তুমি তাদের হুকুম, নিয়ম ও আইন দিয়েছিলে।
15. খিদে মিটাবার জন্য তুমি বেহেশত থেকে তাদের খাবার দিয়েছিলে আর পিপাসা মিটাবার জন্য পাথর থেকে পানি বের করে দিয়েছিলে। যে দেশ তাদের দেবার জন্য তুমি কসম খেয়েছিলে সেখানে গিয়ে তা অধিকার করবার জন্য তুমি তাদের হুকুম দিয়েছিলে।
16. “তবুও আমাদের পূর্বপুরুষদের ব্যবহার ছিল অহংকারে পূর্ণ; তারা একগুঁয়ে হয়েছিল আর তোমার হুকুম পালন করে নি।
17. তারা বাধ্য থাকতে অস্বীকার করেছিল, আর যে সব অলৌকিক চিহ্ন তুমি তাদের মধ্যে করেছিলে তাও তারা মনে রাখে নি। তারা একগুঁয়েমি করে আবার গোলামী করতে মিসরে ফিরে যাবার জন্য একজন নেতাকে নিযুক্ত করেছিল। কিন্তু তুমি মাফদানকারী আল্লাহ্, দয়াময় ও মমতায় পূর্ণ; তুমি সহজে অসন্তুষ্ট হও না এবং তোমার মহব্বতের সীমা নেই। তাই তুমি তাদের ত্যাগ কর নি।
18-19. এমন কি, তারা নিজেদের জন্য ছাঁচে ফেলে একটা বাছুরের মূর্তি তৈরী করে বলেছিল, ‘ইনিই তোমাদের আল্লাহ্; মিসর দেশ থেকে ইনিই তোমাদের বের করে এনেছেন।’ এইভাবে যখন তারা তোমাকে ভীষণ কুফরী করেছিল তখনও তোমার প্রচুর মমতার জন্য তুমি মরুভূমিতে তাদের ত্যাগ কর নি। দিনের বেলায় তাদের চালিয়ে নেবার জন্য মেঘের থাম এবং রাতে তাদের যাওয়ার পথে আলো দেবার জন্য আগুনের থাম তাদের কাছ থেকে সরে যায় নি।
20. তুমি তাদের শিক্ষা দেবার জন্য তোমার মেহেরবান রূহ্কে দান করেছিলে। তাদের খাওয়ার জন্য তুমি যে মান্না দিয়েছিলে তা বন্ধ করে দাও নি; তুমি তাদের পিপাসা মিটাবার জন্য পানি দিয়েছিলে।
21. মরুভূমিতে চল্লিশ বছর ধরে তুমি তাদের পালন করেছিলে। তাদের কিছুরই অভাব হয় নি; তাদের কাপড়-চোপড়ও পুরানো হয় নি এবং তাদের পা-ও ফোলে নি।
22. “পরে তুমি অনেক রাজ্য ও জাতি তাদের হাতে দিয়েছিলে, এমন কি, তাদের সমস্ত জায়গাও তাদের মধ্যে ভাগ করে দিয়েছিলে। তারা হিষ্বোণের বাদশাহ্ সীহোনের দেশ ও বাশনের বাদশাহ্ উজের দেশ অধিকার করেছিল।
23. আসমানের তারার মত তুমি তাদের অসংখ্য সন্তান দিয়েছিলে এবং তুমি তাদের সেই দেশে নিয়ে গিয়েছিলে যে দেশে ঢুকে তা অধিকার করবার কথা তুমি তাদের পূর্বপুরুষদের বলেছিলে।
24. তাদের সন্তানেরা সেই দেশে গিয়ে তা দখল করে নিয়েছিল। সেই দেশে বাসকারী কেনানীয়দের তুমি তাদের সামনে নত করেছিলে। কেনানীয়দের, তাদের বাদশাহ্দের ও দেশের অন্যান্য জাতিদের তুমি তাদের হাতে তুলে দিয়েছিলে যাতে তারা তাদের উপর যা খুশী তা-ই করতে পারে।
25. তারা দেয়াল-ঘেরা অনেক শহর ও উর্বর জমি অধিকার করেছিল; তারা সব রকম ভাল ভাল জিনিসে ভরা বাড়ী-ঘর ও আগেই খোঁড়া হয়েছে এমন অনেক কূয়া, আংগুর ক্ষেত, জলপাইয়ের বাগান এবং অনেক ফলের গাছ অধিকার করেছিল। তারা খেয়ে তৃপ্ত হয়ে মোটা-সোটা হয়েছিল এবং তোমার দেওয়া প্রচুর মেহেরবানী ভোগ করেছিল।
26. “কিন্তু তবুও তারা অবাধ্য হয়ে তোমার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিল; তোমার শরীয়ত তারা ত্যাগ করেছিল। তোমার যে নবীরা তাদের সতর্ক করতেন যাতে তারা তোমার দিকে ফিরে আসে সেই নবীদের তারা মেরে ফেলেছিল; তারা তোমাকে ভীষণ কুফরী করেছিল।
27. কাজেই তুমি শত্রুদের হাতে তাদের তুলে দিয়েছিলে আর শত্রুরা তাদের উপর জুলুম করত। তাদের কষ্টের সময় তারা তোমার কাছে ফরিয়াদ জানিয়েছিল আর তুমি বেহেশত থেকে তা শুনেছিলে। তুমি প্রচুর মমতায় তাদের কাছে উদ্ধারকারীদের পাঠিয়ে দিয়েছিলে। তারা শত্রুদের হাত থেকে তাদের উদ্ধার করেছিল।
28. “কিন্তু যেই তারা বিশ্রাম পেত অমনি আবার তারা তোমার চোখে যা খারাপ তা-ই করত। এর পর তুমি শত্রুদের হাতে তাদের ছেড়ে দিয়েছিলে যাতে শত্রুরা তাদের কর্তা হতে পারে। কিন্তু আবার যখন তারা তোমার কাছে কাঁদত তখন বেহেশত থেকে তা শুনে তোমার মমতায় তুমি বারে বারে তাদের উদ্ধার করতে।